আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির নীল নকশার অংশ হিসেবে ধর্মীয় উৎসবে আক্রমণ চালাচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সংগঠনটির নেতারা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের হামলার শঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের আশু দৃষ্টি তারা কামনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) কেরানীগঞ্জের কাজীরগাঁওয়ে নামযজ্ঞ ও বৈষ্ণব মহোৎসব চলাকালে হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দেওয়া বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কথা বলেন।
তারা জানান, একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্তের অতর্কিত হামলায় কাজীরগাঁওয়ে নামযজ্ঞ ও বৈষ্ণব মহোৎসব শুধু লণ্ডভণ্ড হয়নি, এতে প্রায় ৮ জন ভক্ত গুরুতর আহত হয়েছেন। মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। অনেকের হাতের শাঁখা জোর করে ভেঙে ফেলা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কোকিল মণ্ডল ও সঞ্জয় মণ্ডলকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হত্যার উদ্দেশে কোকিল মণ্ডলের মাথায় ধারালো চাপাতি দিয়ে এবং সঞ্জয় মণ্ডলের বাম হাতে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
গত ১ ডিসেম্বর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সাথে একই গ্রামের অলি, মকবুল, হাছান এবং কুমলিভিটা গ্রামের কুদ্দুস, সানিসহ অজ্ঞাতনামা ৩০/৪০ জন জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করেন তারা। ঘটনার পর দিন এ অভিযোগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের পর মাত্র একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঐক্য পরিষদের দু’সদস্য বিশিষ্ট এক প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার বিকেলে অকুস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের খোঁজখবর নেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন- পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। স্থানীয় ঐক্য পরিষদের সভাপতি মদন মোহন সরকার প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন।
ঐক্য পরিষদের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিবৃতিতে বলেন, সারা দেশজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান ও উৎসব প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু রয়েছে এবং আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত তা চলবে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাম্প্রদায়িক মহলবিশেষের দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির নীল নকশার অংশ হিসেবে এসব ধর্মীয় উৎসবে আক্রমণ পরিচালনার আশঙ্কা বিদ্যমান। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের আশু দৃষ্টি তারা কামনা করেছেন।
মন্তব্য করুন