অনলাইন প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের মানববন্ধন। ছবি : কালবেলা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের মানববন্ধন। ছবি : কালবেলা

ধর্ষণ নামক ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে ৫ দফা দাবিতে এবং শিশু আছিয়াকে পাশবিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ।

শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ‘বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও’, ‘ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দাও, দিতে হবে’- এই দাবিতে সহস্রাধিক উপস্থিত নারীর কণ্ঠে স্লোগান তুলে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।

অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যাপক নূরুন্নিসা সিদ্দীকা বলেন, আছিয়া হত্যার মামলার রায় এক সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে এবং আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। সব ধর্ষককে ফাঁসি দিতে হবে। ধর্মহীনতার চর্চা এবং নৈতিকতাহীন শিক্ষা মূল্যবোধের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে জনগণকে উজ্জীবিত করতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা পরিহার করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্ষণ মামলায় কারাদণ্ডের বিধান বাতিল করে শুধু মৃত্যুদণ্ডের (ফাঁসি) বিধান করতে হবে। ধর্ষকরা যুগে যুগে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণেই সমাজ থেকে ধর্ষণ নামক ব্যাধি দূর করা যায়নি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, ধর্ষককে তার নিজ এলাকায় জনসম্মুখে ফাঁসি দিতে হবে। এতে পরবর্তীতে কেউ ধর্ষণের অপরাধ করার সাহস পাবে না। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তি করার এবং জামিন বিধান বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে- আমরা এই ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই। শিশু আছিয়াকে শুধু ধর্ষণ করা হয়নি হত্যাও করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সরকারের ঘোষণা ও আমাদের ৫ দাবির আলোকে বিচার করতে হবে। নতুবা নারী সমাজ কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী, শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যা দ্রুত বিচার আইনে ধর্ষকদের বিচার করার দাবি জানান। তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণের ঘটনা সমাজে বিস্তার করেছে। ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করেছে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তার বিচার করেনি। এতেই স্পষ্ট আওয়ামী লীগ ধর্ষণের বিস্তার ঘটিয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমথর্নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই মানববন্ধনের মাধ্যমে সরকারের কাছে নারী সমাজের ৫ দাবি তুলে ধরার অর্থ হচ্ছে সরকারকে জনস্বার্থে ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে প্রয়োজনীয় কাজ দেখিয়ে দেওয়া। সরকার এই ৫ দাবি বাস্তবায়ন না করলেই নারী সমাজকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আগে মানুষের নৈতিকতার সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার জরুরি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপরাধীরা বেরিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না আসলে রাষ্ট্র সংস্কারের সুফল পাওয়া যাবে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নাজমুন নাহার নীলু বলেন, সমাজে মূল্যবোধ আর নৈতিকতার অভাব। তাই আমরা আর নীরব থাকতে পারি না। শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতার কোনো উপাদান নেই। শিক্ষা ব্যবস্থায় ধস নামার কারণেই সমাজের আজ করুণ পরিণতি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী বিগত ৮ বছরে সাড়ে ৩ হাজার শিশু ধর্ষণের মামলা হলেও একটি মামলারও বিচার হয়নি। তিনি সব ধর্ষণ মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করে ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য যথাক্রমে- রোজিনা আখতার, আয়েশা সিদ্দিকা পারভীন, সালমা সুলতানা, ইরানি আখতার, মাহবুবা জাহান, খোন্দকার আয়েশা সিদ্দিকা, সুফিয়া জামাল সহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতারা।

মানববন্ধনে মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নূরুন্নিসা সিদ্দিকার পক্ষ থেকে দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হলো :

১. আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।

২. সব ধর্ষকের ফাঁসি চাই।

৩. বিচারের দীর্ঘসূত্রতা বিচারহীনতার নামান্তর। এক মাসের মধ্যে হত্যা ও ধর্ষণের বিচার এবং রায় কার্যকর করতে হবে।

৪. নৈতিকতাহীন শিক্ষা এবং সামাজিক অবক্ষয়ের মূল কারণ অনৈতিকতা। এটা দূর করার জন্য ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং ইসলামী সামাজিক মূল্যবোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

৫. এ দেশের শতকরা ৮৭ ভাগ মুসলমান। এখানে কোরআনের আইন বাস্তবায়ন হলে ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধ কমতে বাধ্য। তাই আমরা কোরআনের আইন বাস্তবায়ন চাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভাসমান বীজতলা তৈরিতে সফল খুলনার রোকেয়া

ব্রাজিল থেকে ১২০ টাকায় গরুর মাংস আমদানির খবর ভিত্তিহীন

ন্যূনতম কর একটা কালাকানুন : এনবিআর চেয়ারম্যান

ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি যেদিন

শপথ নিলেন হাইকোর্টের ২৫ বিচারপতি

সাকিবের প্রিয় ‘শিকারের’ তালিকায় তামিম, দেখে নিন পুরো তালিকা

‘ভয়ংকর আফ্রিদির’ মুখোশ খুললেন তানভীর রাহী

ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু

তথ্য গোপন করে প্রধান শিক্ষক, অতঃপর...

পুঁজিবাজারের প্রতারক চক্র গোয়েন্দা সংস্থার নজরে: ডিএসই

১০

পরিবর্তন হচ্ছে বাংলাদেশ জেলের নাম 

১১

চট্টগ্রামে সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে ২ শ্রমিকের মৃত্যু

১২

রাতে খাওয়ার পরও ক্ষুধা লাগার কারণ জেনে নিন

১৩

বৃষ্টি-গরম নিয়ে নতুন বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

১৪

প্রেমের স্মৃতি টেনে কিমের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন ট্রাম্প

১৫

কমলাপুর রেলস্টেশনে নারীকে কুপিয়ে হত্যা, প্রেমিক আটক

১৬

নদীভাঙনের কবলে শতবর্ষী স্কুল, হুমকিতে মাঠ ও শহীদ মিনার

১৭

আবারও সেরা ব্রাজিল, কলম্বিয়াকে হারিয়ে জিতল টানা তৃতীয় শিরোপা

১৮

দুদিন বন্ধ থাকবে ঢাবি মেট্রো স্টেশন

১৯

‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের পেজটি গুজব তৈরির প্ল্যাটফর্ম : বাংলাফ্যাক্ট

২০
X