বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম বলেছেন, গণতন্ত্র নাগরিকদের মধ্যে সমতা, আইনের শাসন, নাগরিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। যেখানে গণতন্ত্র থাকে না, সেখানে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা বলতে কিছুই থাকে না। বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র না থাকায় মানুষ সাম্য, নাগরিক অধিকার, সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায়বিচার, ভোটাধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মানুষ হামলা-মামলা, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। দেশের নাগরিকদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। এক কথায় বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে খুবই সংকুচিত করা হয়েছে। গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্র বানানো হয়েছে।
১৫ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
এ টি এম মাছুম বলেন, বিশ্বের কল্যাণের জন্য মানবাধিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের অধিনস্থ প্রতিষ্ঠান- টম ল্যান্টস হিউম্যান রাইটস কমিশন ‘হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ : অ্যান আপডেট’ শিরোনামে এক ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে। সেখানে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ব্রিফিং-এ বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব, সাংবাদিক-ব্লগার নিপীড়ন, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ ও ইন্টারনেটের স্বাধীনতা খর্ব ও সংকুচিত করা হয়েছে। সরকারের সমালোচকরা প্রতিহিংসামূলক গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভীতির শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। ভাত ও ভোটের অধিকার, স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারসহ সবকিছুই বর্তমান সরকার কেড়ে নিয়েছে। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করলেও গুম-খুন করে তা স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এ সরকারের আমলে সবচাইতে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংগঠনের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা এবং জামায়াতে ইসলামী ও বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের দিনের পর দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। আটককৃত নেতাকর্মী জামিন লাভ করলেও তাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। উল্টো তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করে নতুন নতুন মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের কবল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মতো অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করে দেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে। আর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি সচেতন দেশবাসীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন