

দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় পর প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ফ্লাইট নং বিজি-২০২ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক রহমানকে স্বাগত জানান। সেখানে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনি রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে তারেক রহমান রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এদিকে তারেক রহমানকে বহনের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিআইপি গেটে লাল-সবুজ রঙের একটি বিশেষ বুলেটপ্রুফ বাস নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বাসটি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিশেষভাবে প্রস্তুত করা বাসটি লাল ও সবুজ রঙের। বাসটির দুই পাশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বড় প্রতিকৃতি সংযুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি বাসটির জানালাগুলো বিশেষ নিরাপত্তা কাচে আবৃত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারেক রহমান ওই বাসে করেই এভারকেয়ার হাসপাতালে যেতে পারেন। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। হাসপাতালের পথে ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ারও কথা রয়েছে।
তারেক রহমানের আগমনকে ঘিরে বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সেখানে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানীর ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে, অর্থাৎ ৩০০ ফিট এলাকায় এ উপলক্ষে মঞ্চ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে সংবর্ধনাস্থল এরই মধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই মঞ্চ এলাকা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেক নেতাকর্মী খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে এখনো নেতাকর্মীদের আসা অব্যাহত রয়েছে।
প্রায় ১৭ বছর পর হস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি সিলেটে অবতরণ করেছে। যাত্রাবিরতি শেষে বিমানটি দুপুর পৌনে ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে জানা গেছে।
বুধবার সকাল থেকেই মঞ্চের শেষ মুহূর্তের কাজ ও সজ্জা কার্যক্রম প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, ব্যানার, পতাকা, তোরণ ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত মঞ্চ এলাকা পরিদর্শনে নেতাকর্মীর ভিড় বাড়ছে। অনেকেই আগের রাত থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মঞ্চ ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টিম টহল দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে।
বিশ্বরোড মোড় থেকে পূর্বাচলমুখী সড়কের উত্তর অংশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুট আয়তনের একটি বিশাল মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু তারেক রহমানের আগমনের।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইটটি। একই দিন রাত সোয়া ৮টায় লন্ডনের নিজ বাসা ত্যাগ করেন তারেক রহমান। তিনি স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে রাত সোয়া ১০টায় হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান।
মন্তব্য করুন