কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বর্তমান ইসির অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই আত্মহত্যা : রিজভী

রুহুল কবির রিজভী। পুরোনো ছবি
রুহুল কবির রিজভী। পুরোনো ছবি

বর্তমান ইসির অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানেই আত্মহত্যা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সারা দেশে হরতাল পালনের খবর জানাতে আজ সোমবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘বর্তমান ইসি যে সরকারের পথরেখা অনুসারে চলবে তার প্রমাণ তারা (ইসি) নিজেরাই দিচ্ছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনের কোনো রদবদল করবে না বলে তারা জানিয়েছে। তাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক। এই ইসি কী করে গ্যারান্টি দিতে পারে, এখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে? তাদের আওয়ামী সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এটাই তো বাস্তব সত্য। কারণ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচন কমিশনারদের রক্ত পরীক্ষা করে তাদের কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এটি হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন একদলীয় বাকশালী নির্বাচন। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের অর্থই হলো নির্বাচনী আত্মহত্যা।’ সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২২ ও ২৩ নভেম্বর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের রায়ে বাতিল করার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে আপিল করা হয়েছিল গতকাল (রোববার) তা ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ করা হয়েছে। আপিলকারী দল রায়টিকে ‘ন্যায় ভ্রষ্ট’ বলে উল্লেখ করে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদানের মাধ্যমে তাদের সুবিচার থেকে বঞ্চিত করার দৃষ্টান্ত নতুন নয় বলেই দেশবাসী এই রায়ে বিস্মিত না হলেও সুবিচার লাভে শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগে যুক্ত ব্যক্তিগণের রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক বক্তব্য এবং ক্ষমতাসীন সরকারের ইচ্ছাপূরণে সহায়তার ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ছে। যে রাজনৈতিক দলের বিস্তৃতি সারা দেশে দৃশ্যমান। জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকারের প্রায় সব স্তরে প্রতিনিধিত্বশীল থাকার প্রমাণিত দৃষ্টান্তের অধিকারী। তবে, নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পাশাপাশি নাম গোত্রহীন অপরিচিত দলকে নিবন্ধন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার দৃষ্টান্ত সুবিচারের প্রমাণ বহন করে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধিতা করা যে কোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সেই অধিকারের সুরক্ষা বিচার বিভাগের কাছেই প্রাপ্য। এর ব্যতিক্রম গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি এবং অগ্রহণযোগ্য।’

‘নির্বাচনের মাঠ খালি করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাজা’ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপুসহ ১৪ জন নেতা এবং রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা যুব দলের সহসভাপতি তারেক হাসান সোহাগ, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জহির আলম নয়নকে ‘মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা’ প্রদানের নিন্দা জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘এসব ফরমায়েশি রায় সুপরিকল্পিত। নির্বাচনের আগে মাঠ ফাঁকা করার জন্য বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের শুধু মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারই নয়, পুরোনো মামলায় সাজা দেওয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। সজীব তরুণ এসব নেতাদের যদি সাজা দিয়ে আটকিয়ে রাখা যায় তাহলে শেখ হাসিনার মসনদ টিকে থাকবে বহুদিন, এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব নেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।’

‘কারাগারে বিরোধী নেতাদের ডিভিশন প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে’ জানিয়ে রিজভী আরও বলেন, ‘কারাগারে বিরোধীদলের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকনকে কারাগারে ডিভিশন হচ্ছে না।’ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘সংসদ সদস্য ছিলেন তাদের ডিভিশন দেওয়া হয় না। কিন্তু আমি জানি, আমাদের তো প্রায়ই এই সরকারের আমলে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ডিভিশন দেওয়া হয়েছে... শুধু ক্ষমতাসীন দলের কানেকশনের কারণে। আর দেশের সুপরিচিত রাজনীতিবিদ ও এমপিদের ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ডিভিশন দেওয়া হয়নি, তাদের অমানবিক পরিবেশে মেঝেতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। এই শীতে মেঝের ঠান্ডায় তারা চরম শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছেন। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারাকর্তৃপক্ষ এখনো তাদের ডিভিশন দিচ্ছে না।’

সারা দেশে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের মোট গ্রেপ্তার ৪৮০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ১৭টি, মোট আসামি ১৯৯০ জনের অধিক, মোট আহত ৮০ জনের অধিক নেতাকর্মী। এ ছাড়া ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের আগে-পরে অদ্যাবধি মোট গ্রেপ্তার ১৪২০০ জনের অধিক নেতাকর্মী, মোট মামলা ৩৩১টির অধিক, মোট আহত ৪৩১৩ জনের অধিক নেতাকর্মী এবং মৃত্যু ১৫ জন (সাংবাদিক একজন)।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ম্যানসিটি ছাড়ছেন আর্জেন্টিনার ‘নতুন মেসি’

‘৫১ লাখ টাকার স্টেডিয়াম ১৪ কোটিতে করার অনুমোদন’, কী ব্যাখ্যা দিলেন সচিব

জনপ্রিয় ব্রিটিশ পত্রিকায় বাংলাদেশ নারী দলের প্রশংসা

ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল প্রস্তুত / মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল শুরু, ভাঙচুরের ঘটনায় কমিটি

আইপিএলে ভালো করলেও ভারত দলে জায়গা নিশ্চিত নয়

ফেব্রুয়ারির কত তারিখে রোজা শুরু হতে পারে 

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

১০

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

১১

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

১২

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

১৩

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

১৪

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

১৫

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

১৬

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

১৭

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১৮

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১৯

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

২০
X