দলীয় সরকারের অধীনে লোভে পড়ে যারা নির্বাচনে অংশ নিবে, তারা জাতির সামনে বেইমান, মীরজাফর ও দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে দাবি করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। রোববার (২৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের এক বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি করেন তারা।
এর আগে তপশিল বাতিল এবং একদফার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলগুলোর দেশব্যাপী চলমান সপ্তম দফায় ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধের সমর্থনে পুরানা পল্টন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে পুরানা পল্টন হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন আয়োজনের নাটক মঞ্চায়ন করতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস, ককটেল সন্ত্রাসের মতো ঘৃণ্য পথ অবলম্বন করেছে সরকার। বিগত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে লাগাতারভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে যাচ্ছে। তাদের দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করছে। তাদের দলীয় গুণ্ডাদের বাড়িতে বোমা বানানোর কারিগর দিয়ে বোমা বানিয়ে সেই বোমা দিয়ে বিরোধী নেতাদের বাড়িতে হামলা করা হচ্ছে। আদালতকে ব্যবহার করে নজিরবিহীনভাবে রাতের বেলায় কোর্ট চালিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ফরমায়েশি রায় দিয়ে সাজা ঘোষণা করেছে।
নেতারা আরও বলেন, এখন তারা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে হুমকি-ধমকি ও নানারকম লোভ-লালসা দিয়ে বিরোধীদলগুলো থেকে নেতাকর্মী ভাগিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার অপচেষ্টা করতেছে। তাদের পোষা মিডিয়া ব্যবহার করে আন্দোলনের শক্তিগুলোর মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে মিথ্যা সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু এসব করে শেষ রক্ষা হবে না। এইবার তারা কোনোভাবেই ২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো বিনাভোটের কিংবা রাতের ভোটের নির্বাচন করতে পারবে না। বিরোধীদের ছোট একটা অংশকে যদি নির্বাচনের লোভ দেখিয়ে পাতানো ফাঁদে নিতেও পারে আর বাকিদের সবাইকেও যদি জেলে পুরে রাখে তারপরও বাংলাদেশের জনগণ এই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। যারা আজকে লোভে পড়ে নির্বাচনে অংশ নিবে জাতির সামনে বেইমান, মীরজাফর ও দালাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের জনগণ ভোটাধিকারের এই আন্দোলন জারি রেখেই এই সরকারের পতন নিশ্চিত করে ঘরে ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নেতারা।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সহসভাপতি স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ মিয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন