মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৪৯৬ অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। কুয়ালালামপুরের সেরিকামবাগান এলাকার পুত্রা পারমাই সেলেসা অ্যাপার্টমেন্টে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে পরিচালিত এক সমন্বিত অভিযানে তাদের আটক করা হয়। খবর ফ্রি মালয়েশিয়ান টুডের।
খবরে বলা হয়, অভিযানটি পরিচালনা করে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের (জিআইএম) এর সেলাঙ্গর ও কুয়ালালামপুর শাখা, জেনারেল অপারেশনস ফোর্স (পিজিএ), সুবাং জায়া সিটি কাউন্সিল (এমবিএসজে), ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট (জেপিএন) এবং মালয়েশিয়ান সিভিল ডিফেন্স ফোর্স (এপিএম)।
ইমিগ্রেশন বিভাগের উপ-মহাপরিচালক (অপারেশনস) দাতুক জাফরি এমবক তাহা এক বিবৃতিতে জানান, অভিযানের সময় ৭৪১ বিদেশির কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এর মধ্যে বৈধ কাগজপত্র না থাকা, ভিসার শর্ত লঙ্ঘন, মেয়াদোত্তীর্ণ অনুমতিপত্র বহন করা, অচেনা বা জাল পরিচয়পত্র থাকা এবং বিভিন্ন অভিবাসন অপরাধের দায়ে মোট ৪৯৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন ৩৫৭ পুরুষ, ১০৭ নারী এবং ৩২ শিশু। তাদের জাতীয়তা ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাফরি জানান, এসব অভিবাসীর অধিকাংশই সেলাঙ্গরের পাইকারি বাজার, আশপাশের বাণিজ্যিক এলাকা, নির্মাণ খাত এবং গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি আরও বলেন, এই অ্যাপার্টমেন্ট অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ অভিবাসীদের একটি ‘হটস্পট’ হিসেবে পরিচিত, তাই নিয়মিতভাবে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, মালয়েশিয়ার অভিবাসন আইন ১৯৫৯/৬৩, পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬, অভিবাসন বিধিমালা ১৯৬৩ এবং মানবপাচার ও অভিবাসী চোরাচালানবিরোধী আইন ২০০৭ অনুযায়ী এসব বিদেশি নাগরিকদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার, বিচার ও দেশান্তর করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ইমিগ্রেশন বিভাগ মালয়েশিয়ার নাগরিক ও নিয়োগদাতাদের সতর্ক করে বলেছে, তারা যেন অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় বা সহায়তা না করে। কেউ এই কাজে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, অবৈধ অভিবাসীদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, দাতুক জাফরি আরও জানান, ১৯ মে ২০২৫ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০২৬ পর্যন্ত একটি ‘অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি ২.০’ চালু করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ। এই কর্মসূচির আওতায় বিদেশিরা ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা ও ২০ রিঙ্গিতের একটি বিশেষ পাশ নিয়ে নিজ দেশে স্বেচ্ছায় ফেরত যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন