ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা কঠিন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) স্পট-ফিক্সিং অভিযোগের তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে মানসিক চাপে ভুগছেন তিনি। এমনকি এই মানসিক চাপই তাকে শারীরিকভাবে অসুস্থ করে তুলেছে বলে দাবি করেছেন ক্লাবের কোচ গ্রাহাম পটার।
লুকাস পাকেতার বিরুদ্ধে রয়েছে চারটি স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ, যেখানে অভিযোগ উঠেছে—তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে হলুদ কার্ড দেখেছেন এবং সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বাজি ধরার উদ্দেশ্য ছিল। যদি এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে আজীবন নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা।
তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা এগোচ্ছে ধীরগতিতে। এর ফলে বাড়ছে পাকেতার উদ্বেগ। আর সেই মানসিক চাপে পড়ে সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যাচের আগে এবং ম্যাচ চলাকালীন পাকেতা অসুস্থ বোধ করছিলেন বলে জানান ওয়েস্ট হ্যাম কোচ পটার। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এই সপ্তাহটা ওর জন্য ভীষণ কঠিন ছিল, এটা সবাই বুঝতে পারবেন। মানসিক চাপে ও অসুস্থ হয়ে পড়ে, ফলে ইউনাইটেড ম্যাচে তাকে ঝুঁকিতে ফেলতে চাইনি। তবে সে এখন আবার অনুশীলনে ফিরেছে, দলকে সাহায্য করতে চায়। আমরা দেখবো উইকেন্ডে তাকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়।’
এই মাসের শুরুতে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচে একটি হলুদ কার্ড দেখার পর মাঠেই অঝোরে কেঁদে ফেলেন পাকেতা। তার সেই কান্না দেখে ফুটবলবিশ্বও আঁচ করে নেয় তার ভেতরের যন্ত্রণা। পরে পাকেতার স্ত্রী মারিয়া এডুয়ার্দা ফর্নিয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, ‘আমাদের পরিবার এক দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এত গুরুত্বপূর্ণ এক অভিযোগে এত ধীরে তদন্ত প্রক্রিয়া কেন চলছে? খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে পাকেতার মতো আরও অনেক ফুটবলারের ক্যারিয়ার অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে।
পাকেতা কতটা প্রস্তুত তা নিয়েও সংশয় থাকলেও, ওয়েস্ট হ্যাম রোববার ঘরের মাঠে তাদের ২০২৪-২৫ মৌসুমের শেষ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে নটিংহ্যাম ফরেস্টের মুখোমুখি হবে। শেষ ম্যাচে জয় পেতে চাইবে তারা, তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে লুকাস পাকেতার ভবিষ্যৎ—ফুটবলে তার ফিরে আসা, নাকি নিষিদ্ধ হওয়ার দুঃস্বপ্ন? সময়ই এর উত্তর দেবে।
মন্তব্য করুন