ভিলা বেলমিরোর আকাশজুড়ে ছিল একটিই নাম—নেইমার জুনিয়র। নিজের প্রিয় ক্লাবে ফিরেই যেন আবারও প্রমাণ করলেন, তিনি এখনো মাঠে পার্থক্য গড়তে পারেন। লিগ শীর্ষে থাকা ফ্ল্যামেঙ্গোর বিপক্ষে দারুণ এক গোল করে সান্তোসকে এনে দিলেন স্বস্তির জয়, সঙ্গে অবনমন অঞ্চল থেকেও তুলে আনলেন ক্লাবকে।
একদিকে ক্লাব বিশ্বকাপে চেলসিকে হারিয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ফ্ল্যামেঙ্গো, অন্যদিকে টেবিলের নিচের দিকের সান্তোস। কিন্তু মাঠে নামার পর দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন ছিল। নেইমার ছিলেন অনবদ্য, ডান-বাম ছুটে প্রতিপক্ষ রক্ষণকে বারবার ভেঙে দিচ্ছিলেন। আর অধিনায়কত্বের গাম্ভীর্য যেন তার পারফরম্যান্সে এনে দেয় নতুন মাত্রা।
ম্যাচের এক অনন্য মুহূর্তে নেইমার নাটকীয়ভাবে ‘নাটমেগ’ করে বসেন ফিলিপে লুইসকে, যিনি কি না এখন ফ্ল্যামেঙ্গোর কোচ। একসময় জাতীয় দলের সতীর্থ ছিলেন দুজন, সেই সম্পর্কের ছাপ মেলে ওই ঘটনার পরপরই—দুজনই হাসিমুখে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেন।
ম্যাচের ৮৫তম মিনিটে সান্তোসের সমর্থকদের অপেক্ষার অবসান ঘটে। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে নেইমার দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুর্দান্ত ডান পায়ের শটে বল পাঠান জালে। ফ্ল্যামেঙ্গোর অভিজ্ঞ গোলকিপার আগুস্তিন রোসি কিছুই করতে পারেননি। গোলের সঙ্গে সঙ্গে গর্জে ওঠে স্টেডিয়াম, যেন অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা সান্তোসের উৎসব।
এই জয় শেষে সান্তোসের পয়েন্ট দাঁড়ায় ১৪, যা অবনমন অঞ্চল থেকে তাদের বের করে এনেছে। একই সঙ্গে তারা মাত্র দুই পয়েন্ট দূরে রয়েছে কোপা সুদামেরিকানার কোয়ালিফিকেশন জোন থেকে।
অন্যদিকে ফ্ল্যামেঙ্গোর ২৭ পয়েন্ট থাকলেও, শীর্ষস্থান এখন আর নিরাপদ নয়। ক্রুজেইরো সমান পয়েন্ট নিয়ে এখনো ম্যাচ খেলেনি, এবং তাদের প্রতিপক্ষ ফ্লুমিনেন্স—ঘরের মাঠ মারাকানায়।
এই ম্যাচের মাধ্যমে নেইমার শুধু জয়ই এনে দেননি, সান্তোসে তার ফেরার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেছেন মাঠেই। অনেকেই বলছিলেন—চোট আর বয়স হয়তো তাকে টপ লেভেল থেকে ছিটকে দিয়েছে। কিন্তু ভিলা বেলমিরোর রাত বলছে ভিন্ন কথা।
এখন প্রশ্ন একটাই—এই নেইমারকে দেখা যাবে শুধু রক্ষণসংকটে থাকা সান্তোসকে বাঁচাতে, নাকি আবারও বড় কিছু জয়ের পথে নিয়ে যেতে?
মন্তব্য করুন