লা লিগায় ঝড় উঠেছে মাঠের বাইরেই। স্পেনের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলাররা এখন মাঠে নয়, লড়ছেন নিজেদের অধিকার নিয়ে। “মায়ামি প্ল্যান” ঘিরে লা লিগা কর্তৃপক্ষ ও খেলোয়াড় ইউনিয়নের (এএফই) মধ্যে তৈরি হয়েছে গভীর অস্বস্তি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সপ্তাহান্তের ম্যাচগুলোয় ৩০ সেকেন্ড খেলা বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানাতে পারেন খেলোয়াড়রা।
লা লিগা ও এএফইর সম্পর্ক বহু বছর ধরে টানাপোড়েনের মধ্যে থাকলেও সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। মূল বিতর্ক ঘিরে আছে ২০ ডিসেম্বর বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত। খেলোয়াড়দের অভিযোগ, এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাদের কোনো মতামত ছাড়াই। গত দুই মাস ধরে অধিনায়করা বারবার তথ্য জানতে চাইলেও, লা লিগা কর্তৃপক্ষ নীরব থেকেছে।
খেলোয়াড় ইউনিয়নের সভাপতি ডেভিড আগানজো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা লা লিগার সঙ্গে বহু বছর ধরে কাজ করছি। কিন্তু এবার তারা আমাদের উপেক্ষা করছে। মায়ামি ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সময়েই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া— এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়।’
এর আগে এএফই একাধিক অভিযোগ তুলেছে লা লিগার বিরুদ্ধে—
এরপরও লা লিগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের তেবাস, বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। লা লিগা জানায়, “সময়ের সংঘাত” থাকায় তারা উপস্থিত থাকতে পারেনি। তবে খেলোয়াড়দের মতে, এটি ছিল কৌশলগত এড়িয়ে যাওয়া।
বর্তমানে এএফই প্রতিটি দলের অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলছে, কীভাবে সম্মিলিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো যায় তা ঠিক করতে। ধর্মঘট আপাতত শেষ বিকল্প হলেও, প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ম্যাচের শুরুতে ৩০ সেকেন্ড খেলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব এখন আলোচনায় আছে।
যদি সেটি কার্যকর হয়, তবে বিশ্বজুড়ে ফুটবলপ্রেমীরা এক বিরল দৃশ্য দেখবে— লা লিগার প্রতিটি মাঠে খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে থাকবেন নীরব প্রতিবাদে, নিজেদের সম্মান ও অংশগ্রহণের অধিকারের দাবি জানাতে।
লা লিগা মাঠে গড়ানোর আগে, স্পেনের ফুটবলে এখন প্রশ্ন একটাই—
মাঠে প্রথম বাঁশি বাজতেই কি থমকে যাবে খেলা? নাকি এই নীরবতা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে খেলোয়াড় অধিকার আন্দোলনে?
মন্তব্য করুন