

মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এসেছে হীরা। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবেই এমন ঘটেছে। এতে ভাগ্য বদলে গেছে দুই বন্ধুর। রাতারাতি তারা বনে গেছেন অর্ধকোটির বেশি টাকার মালিক।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায় শৈশবের দুই বন্ধু মাটি খুঁড়ে একটি হীরার খোঁজ পেয়েছেন। শীতের এক সকালে হীরাখনন অঞ্চলে কাজ করার সময় তারা খুঁজে পান একটি দামি হীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সতীশ খাটিক ও সাজিদ মোহাম্মদ কয়েক সপ্তাহ আগে লিজ নেওয়া একটি জমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎই তাদের নজরে আসে বড় ও ঝকঝকে একটি পাথর। পরে সেটি পান্না শহরের সরকারি হীরা মূল্যায়ন কেন্দ্রে নেওয়া হলে জানা যায়, এটি ১৫ দশমিক ৩৪ ক্যারেটের রত্নমানের প্রাকৃতিক হীরা।
পান্নার সরকারি হীরা মূল্যায়নকারী অনুপম সিং বিবিসিকে জানান, এই হীরাটির আনুমানিক বাজারমূল্য ৫৫ থেকে ৬৫ লাখ টাকা। মার্কিন ডলারে যার দাম প্রায় ৫৫ হাজার থেকে ৬৬ হাজার। শিগগির এটি নিলামে তোলা হবে।”
বিবিসি জানিয়েছে, সরকার প্রতি তিন মাস অন্তর হীরার নিলাম আয়োজন করে, যেখানে দেশ-বিদেশের ক্রেতারা অংশ নেন। হীরার দাম নির্ধারণে ডলারের বিনিময় হার ও আন্তর্জাতিক রাপাপোর্ট রিপোর্টের মানদণ্ড বিবেচনায় নেওয়া হয় বলে জানান অনুপম সিং।
হীরা পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত সতীশ ও সাজিদ বলেন, এখন আমরা আমাদের বোনদের বিয়ে দিতে পারব।
২৪ বছর বয়সী সতীশ একটি মাংসের দোকান চালান এবং ২৩ বছর বয়সী সাজিদ ফল বিক্রি করেন। দুজনই দরিদ্র পরিবারের সন্তান এবং পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তাদের পরিবার হীরা খোঁজার চেষ্টা করে আসছিল। পান্না জেলা ভারতের অন্যতম অনুন্নত অঞ্চল—এখানে দারিদ্র্য, পানির সংকট ও বেকারত্ব প্রকট। তবে একই সঙ্গে এটি ভারতের সবচেয়ে বড় হীরা মজুতের এলাকাও।
সাজিদের বাবা নাফিস জানান, তার বাবা ও দাদাও বহু বছর ধরে এসব জমিতে খোঁড়াখুঁড়ি করেছেন, কিন্তু পেয়েছেন শুধু মাটি আর কোয়ার্টজের টুকরো। তিনি বলেন, অবশেষে সৃষ্টিকর্তা তাদের পরিশ্রম আর ধৈর্যের ফল দিয়েছেন।
স্থানীয় খনন কর্মকর্তা রবি প্যাটেল বলেন, ১৯ নভেম্বর তারা জমিটি লিজ নিয়েছিল। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এত বড় রত্নমানের হীরা পাওয়া সত্যিই বিরল সৌভাগ্যের ব্যাপার।
এখনো নিলাম থেকে অর্থ হাতে না পেলেও দুই বন্ধু আশাবাদী। তারা বলেন, এখনই জমি কেনা, ব্যবসা বড় করা বা শহর ছাড়ার কথা ভাবছি না। আপাতত আমাদের একমাত্র লক্ষ্য—বোনদের বিয়ে দেওয়া।
মন্তব্য করুন