জেন-জি আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু রাজোয়েলিনা পালিয়ে যাওয়ার কয়েক দিনের মাথায় মাদাগাস্কারের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্নেল মাইকেল রান্দ্রিয়ানিরিনা। উচ্চ সাংবিধানিক আদালত গতকাল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে কর্নেল মাইকেল রান্দ্রিয়ানিরিনাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধতা দেন। খবর রয়টার্সের।
মাদাগাস্কারে বিদ্যুৎ ও পানির ঘাটতি নিয়ে চলা কয়েক সপ্তাহের গণবিক্ষোভ সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, জেন-জি নেতৃত্বের ওই আন্দোলনে কমপক্ষে ২২ জন নিহত ও ১০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
শুক্রবার আদালতে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রচুর লোকের সমাগম হয়। সেখানে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অবস্থান নেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতসহ বিদেশি প্রতিনিধিরাও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণের পর মাইকেল রান্দ্রিয়ানিরিনা আগামী ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রান্দ্রিয়ানিরিনা সাংবাদিকদের বলেন, মাদাগাস্কারের মানুষ কোনো সামরিক শাসন বেছে নেয়নি। সরকার বেসামরিক মানুষের। প্রেসিডেন্ট পরিষদেও সামরিক-বেসামরিক উভয় সদস্যই আছেন। তবে সাংবিধানিক আদালতের সিএপিএসএটি কমান্ডারের প্রতি সমর্থন পদ্ধতিগতভাবে অবৈধ উল্লেখ করে এ নিয়োগের নিন্দা জানিয়েছে পালিয়ে যাওয়া প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার সমর্থকরা। তারা বলেছেন, রাজোয়েলিনা এখনো নেতা হিসেবে বহাল আছেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া তরুণদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে যেসব সমস্যা উঠে এসেছে, সেসবের সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন রাজোয়েলিনা।
আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি বাহিনী কঠোর দমন-পীড়ন চালিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বহু মানুষ হতাহত হন। তবে ১১ অক্টোবর সিএপিএসএটি ঘোষণা দেয়, তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ মানবে না। এ ঘোষণায় অভ্যুত্থান নতুন মোড় নেয়। প্রতিবাদকারীরা এই ইউনিটকে স্বাগত জানায়।
রাজোয়েলিনার কার্যালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে, সিএপিএসএটি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করার পরই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাজোয়েলিনাকে গত রোববার একটি ফরাসি সামরিক উড়োজাহাজে করে প্রথমে ফরাসি দ্বীপ রিইউনিয়নে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে তিনি দুবাইয়ে যান।
মন্তব্য করুন