শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নন্দলাল বীরাসিংহে বলেছেন, এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে দেশটিকে বাঁচানোর আর কোনো সুযোগ থাকবে না। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের চক্র থেকে দেশ উদ্ধারের শেষ সুযোগ চলছে। গত বৃহস্পতিবার কলম্বোতে নিজ কার্যালয়ে এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। খবর খালিজ টাইমসের।
নন্দলাল বীরাসিংহে বলেন, অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে তিনি আরও কয়েক বছর আগেই শ্রীলঙ্কাকে সতর্ক করেছিলেন। তখন তিনি শ্রীলঙ্কার উপ-গভর্নর ছিলেন। কিন্তু তখন তার সতর্কবার্তা কেউ আমলে নেয়নি। এমন অবস্থায় আগাম অবসর নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান নন্দলাল। তবে গত বছর শ্রীলঙ্কা চরম অর্থনৈতিক দুর্দশার মধ্যে পড়ার পর দেশটিকে বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের জন্য আবারও তাকে ফিরিয়ে আনা হয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
৬৩ বছর বয়সী নন্দলাল বীরাসিংহে মনে করেন, তিনি যে পরিকল্পনাগুলো সাজিয়েছেন, সেগুলো শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে বাঁচানোর শেষ সুযোগ। এএফপিকে নন্দলাল বলেন, ‘এবার আর কোনো অজুহাত দেওয়া যাবে না। দ্বিতীয় কোনো সুযোগ আর আসবে না, যা করার আমাদের এখনই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি সংকটই একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’ ২০১৯ সালে করের হার কমানোর মতো জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে গোটাবায়া রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ওই সময়ে নন্দলাল বীরাসিংহে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মুনাফার হার কমানোর চেষ্টায় বিপুল পরিমাণে মুদ্রা ছাপানো শুরু করেন। এতে সরকারি ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
নন্দলাল বলেন, ‘আমি জ্যেষ্ঠ উপ-গভর্নর থাকাকালে সবসময়ই আমার উদ্বেগগুলো জানাতাম।’ তবে রাজাপাকসে প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা তার সে আপত্তিগুলোকে গুরুত্ব দেননি। নন্দলাল জানান, পরিস্থিতির কারণে তার তখন মনে হয়েছে আগাম অবসর নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম যেভাবে নীতিমালাগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তাতে পরিস্থিতি খারাপ হবে। সে সময়ে আমি যে ধরনের পরিস্থিতি হওয়ার কথা বলেছিলাম, তেমনটাই ঘটেছে।’
মন্তব্য করুন