মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দেড় যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজারো মানুষ। উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়া খালের ওপর সেতুটির অবস্থান। সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এর দুপাশের রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুর ওপরের অংশের ঢালাই উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর নিচের পিলারের পলেস্তারা খসে পড়ে পাথর ও রড বের হয়ে গেছে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা খুবই করুণ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই সেতুটি দিয়ে চলাচল করছেন আড়ালিয়া গ্রামের হাজারো মানুষ। স্থানীয়রা জানান, আড়ালিয়া গ্রামে প্রায় ৩৫ বছর আগে ধনু হাজি জামে মসজিদ সংলগ্ন খালের দুই পাড়ের বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি সংস্কার না করায় একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসার হাজারো কোমলমতি শিক্ষার্থী, মসজিদে আসা মুসল্লিরাসহ এলাকাবাসী। এ সেতুটি ছাড়া বিকল্প কোনো যাতায়াতের পথ না থাকায় ঝুঁকি জেনেও সেতুটি দিয়ে বাধ্য হয়ে চলাচল করছেন এলাকার লোকজন। বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটির ওপর এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র ভরসা এই সেতুটি; কিন্তু ১০ থেকে ১২ বছর আগে থেকেই এটি বেহাল। এতদিন জীবনের ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়েই সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছেন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ এই এলাকার লোকজন। তিনি নতুন সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এলাকাবাসী আইনজীবী আরফান সরকার খোকন বলেন, সেতুটি অনেক দিনের পুরোনো। সংস্কার না করায় এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতুটির রেলিং ভেঙে যাওয়ায় তার নিজ উদ্যোগে ও এলাকাবাসীর সহায়তায় বেশ কয়েকবার বাঁশ কিনে এনে সেতুটিতে রেলিং দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই বাঁশগুলোর অধিকাংশ ভেঙে পড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ওই সেতুটি দিয়ে গ্রামের ৪ থেকে ৫শ শিক্ষার্থী পাশের রায়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বালুয়াকান্দি ডা. আব্দুল গাফফার স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাতায়াত করে থাকেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েল বলেন, এলাকার একমাত্র ও গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি করুণ দশায় রয়েছে। তবে সেতুটি নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করে প্রকল্প তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এর সমাধান হবে। এ ব্যাপারে গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ইসতিয়াক আহমেদ কালবেলাকে বলেন, আড়ালিয়া গ্রামে অন্য স্থানে একটি ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির জন্য এখনো কোনো প্রকল্প তৈরি করা হয়নি। পর্যায়ক্রমে এলাকাবাসীর সুবিধার্থে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর স্থানে নতুন করে সেতু নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন