‘মেঘ দেখে করিস নে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে’—কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কথাটাই যেন আরও একবার জীবন্ত হয়ে উঠল। এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে অল্প পুঁজি নিয়েও ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। পরপর দুই আসরেই টুর্নামেন্টসেরার মুকুট ধরে রাখতে পারলেন বাংলাদেশের যুবারা। প্রতিপক্ষ ভারত বলেই ৫৯ রানের জয়টা ভবিষ্যতের পথে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে আজিজুল হাকিম তামিমের দলকে।
সর্বশেষ আসরেও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ফাইনালের আগেই ছিটকে গিয়েছিল ভারত। রোববার ফাইনালে দুবাইয়ে আগে ব্যাটিং করে ১৯৮ রানে আটকে যায় বাংলাদেশ। ফাইনালের মঞ্চে এ চ্যালেঞ্জটা নিতে পারেননি ভারতের ব্যাটাররা। ইকবাল হোসেন ইমনের গতির তোপে মাত্র ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ফাইনালসেরার পুরস্কার জেতেন ইমন। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়েও টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন ১৮ বছর বয়সী এই পেসার। ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪০ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিম।
ম্যাচটা শেষ হওয়ার আগেই জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। একশ ছোঁয়ার আগেই ভারতের ৭ ব্যাটারকে ফেরান বাংলাদেশের বোলাররা। ২১তম ওভারে জোড়া আঘাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ টানেন ইমন। ভারতের ব্যাটারদের শুরু থেকেই চাপ রাখতে পেরেছিল বাংলাদেশ। প্রথম স্পেলে আল ফাহাদ ও মারুফ মৃধার তোপে ভারতের টপ অর্ডার ভেঙে যায়। মিডল অর্ডারে তাই চাপ রেখে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা দারুণভাবে সেরে নেন ইমন। শেষ দিকে বাংলাদেশের বোলিং তোপে আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি ভারত। ৩৫.২ ওভারেই গুটিয়ে গেছে তাদের ব্যাটিং অর্ডার।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশেরও শুরুটা ভালো ছিল না। বরাবরের মতো ব্যর্থ হন ওপেনার কালাম সিদ্দিকী। ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকটি ছোট ছোট জুটিতে দলের পুঁজি বাড়তে থাকে। চেনা ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি অধিনায়ক আজিজুল হাকিমও। চতুর্থ উইকেটে শিহাব জেমস ও রিজান হোসেনের ৬২ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। শেষ দিকে কিপার ব্যাটার ফরিদ হাসানের ৩৯ রান দলকে জয়ের পথ মসৃণ করে দেয়। স্কোর বোর্ডে দুইশর কাছাকাছি পুঁজি রাখতে পারাতে প্রতিপক্ষের জন্য চাপও হয়ে গেছে। ভারতও তাই সেটা ছাপিয়ে আর জিততে পারেনি।