কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মির্জা ফখরুল

যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইনে যায়, তারা কী করবে বুঝি

যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইনে যায়, তারা কী করবে বুঝি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যারা একশ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন (নির্বাচনী প্রচারাভিযান) করতে যায়, তারা কী করবে সেটা আমরা ভালো বুঝি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম সোমবার শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় পথসভা করেন। তার এই ‘শোডাউন’ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ নিয়ে গতকাল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলও কথা বললেন। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, অতীতে ছিল, থাকবে এবং বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে।’

রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। আলোচনার শুরুতে বিএনপি মহাসচিব জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ শুরু এবং এর ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মমতার কথা তুলে ধরেন।

‘সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করতে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, জোর দিয়ে বলেছি, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই আমাদের গণতন্ত্রে যেতে হবে। সেইটা হচ্ছে এ টু জেড ডেমোক্রেসি। এই ডেমোক্রেসি ছাড়া আমরা মনে করি না যে, আর কোনো সিস্টেম আছে; যে সিস্টেমে জনগণের কল্যাণ করতে পারে। কিন্তু আজকে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, যেন এই প্রক্রিয়া (নির্বাচন) পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়, অন্য কারও সাহায্য করা যায়, দেশে একটা অনৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়—সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়… কিছু নতুন নতুন, আমি বলি, ‘কুতুব’ আবির্ভূত হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চান জানি না। তাদের ভাষা, তাদের বাক্য, তাদের কথা, তাদের বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশকে একটা নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চায়, তারা গণতন্ত্রের দিকে নিয়ে যেতে চায় না। আজকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।’

সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকেও সেই সময় এসেছে, যে সংকট আজকে সৃষ্টি হচ্ছে এমন সংকট যে, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী তাকে পর্যন্ত আজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে, যা আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না। যারা আমাদের দেশকে রক্ষা করে, যারা সংকটের সময়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায় তাদের আমরা কখনো বিতর্কিত হতে দিতে পারি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ২০২৪ সালে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, সবসময় জানাই। যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাই। সেই আন্দোলনেরও আমাদেরও প্রায় ৮০০ ছাত্র-যুবক শহীদ হয়েছেন। ১৫ বছর আমরা লড়াই করেছি, আমাদের নেতাকর্মীরা কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। আমাদের ছেলেরা এখনো মোটরসাইকেল (রাইডশেয়ারিং) চালায়, হকারি করে। এরপরও আমাদের শুনতে হয় যে, বিএনপি কী করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপিই তো আন্দোলন শুরু করেছে, বিএনপিই তো এত ত্যাগ স্বীকার করেছে, বিএনপি তো ভিত্তি তৈরি করেছে। আজকে হঠাৎ করে বিপ্লব ঘটেনি। বিপ্লবের ভিত্তি তৈরি করতে হয়েছে, এই ভিত্তি তৈরি করেছে বিএনপি।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাই আপনাদের দলকে ছোট করার কোনো কারণ নেই। সবসময় বুক উঁচু করে বেড়াবেন। এই বিপ্লব, এই পরিবর্তনের আপনারাই হচ্ছেন হোতা, আপনারাই সামনের দিকে নিয়ে যাবেন।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দ্রুত নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করা হলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে এবং নির্বাচনমুখী জনগণের সামনে যে কোনো রকমের ষড়যন্ত্র টিকতে পারবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জনগণেই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, দেশের আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে কোনো ধরনের অসিলা না করে নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করুন।

গণতন্ত্র আবার বাধার মুখে পড়তে যাচ্ছে মন্তব্য করে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিগত দিনের মতো গণতন্ত্র, জনগণের মালিকানা, জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার সবকিছু আবার প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা জানি, আগে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এবং ক্ষমতা দখল করার জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো বিভিন্ন স্বৈরাচাররা গ্রহণ করেছে, আমরা তো ভেবেছিলাম আমরা সেখান থেকে মুক্ত হয়ে গেছি এবং একটা মুক্ত পরিবেশে দেশের মানুষ তার মালিকানা ভোগ করবে, একটি মুক্ত নির্বাচন এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে আসবে, সেটা আজকে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, নুরুল ইসলাম মনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বক্তব্য দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এই ৩ পানীয় খেলেই ত্বকে দ্রুত পড়বে বার্ধক্যের ছাপ

জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে ১৩ ভারতীয় ক্রিকেটারের নাম নিবন্ধন

শতকোটি টাকার সরকারি জমি সাড়ে ৫ লাখে হাতবদল

নারায়ণগঞ্জে দগ্ধদের সবার অবস্থা সংকটাপন্ন

নতুন ‘ইনিংস’ শুরু করলেন শচীনকন্যা সারা

যেসব লক্ষণ দেখলে বুঝবেন কেউ গোপনে আপনাকে ভালোবাসে

টিকটকার ইয়াসমিন আসলে ছেলে, জেন্ডার ফাঁসের পর গ্রেপ্তার

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম বরদাশত করা হবে না : উপদেষ্টা নুরজাহান 

নির্বাচনে আ.লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে যা জানালেন সিইসি

বিয়েতে রাজি না হওয়ায় নারীকে খুন, বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

১০

আজ বেবী নাজনীনের জন্মদিন

১১

চা দোকানের মাসিক বিদ্যুৎ বিল ৩ লাখ টাকা

১২

বাড়িতে ঢুকে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

১৩

দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

১৪

রাগিনী এমএমএস ৩’তে যুক্ত হচ্ছেন তামান্না ভাটিয়া

১৫

পর্তুগালের তারকা ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি বাড়াল ম্যানসিটি

১৬

ছবিতে কী দেখছেন, উত্তরই বলে দেবে আপনি অলস না পরিশ্রমী!

১৭

এশিয়া কাপের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করল বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ

১৮

 গাজায় দুর্ভিক্ষ হচ্ছে কি না, জানালেন জাতিসংঘ মহাসচিব

১৯

কেন্দ্র দখল করলেই ভোট বাতিল : সিইসি

২০
X