বশির হোসেন, খুলনা
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০২:২৭ এএম
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:১৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
খুলনার নতুন ত্রাস

আজিমের নাম শুনলেই আঁতকে উঠছে মানুষ

নূর আজিম। ছবি : সংগৃহীত
নূর আজিম। ছবি : সংগৃহীত

একসময় সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিত ছিল খুলনা। বহুল আলোচিত এরশাদ শিকদারের ফাঁসি আর চরমপন্থিদের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আসায় অনেকটাই ঘুচে গিয়েছিল সেই কলঙ্ক। শিক্ষা-সংস্কৃতিতে এগিয়ে যাওয়া নগরীটি অনেকটা শান্তির শহরে পরিণত হয়েছিল। তবে গত অর্ধযুগে খুলনায় নীরবে-নিভৃতে নতুন এক বাহিনী ছড়িয়েছে সন্ত্রাসের থাবা। ছোটখাটো অপরাধ দিয়ে শুরু করে এখন জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। হত্যা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার, সুন্দরবনের কাঠ পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িত এই বাহিনীর সদস্যরা। এত কিছুর পরও সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চায় না। কারণ, প্রতিবাদ করলেই টর্চার সেলে ধরে নিয়ে চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। সেখান থেকে কেউ ফেরে আজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে। কেউ আবার কোনোদিনও ফিরে আসে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে খুলনা মহানগরীর পাড়া-মহল্লা দাপিয়ে বেড়ানো এই গ্যাংয়ের মূলহোতার নাম নূর আজিম। শুধু খুলনা মহানগরীই নয়, জেলার বিস্তীর্ণ জনপদেই আধিপত্য ‘নূর আজিম বাহিনী’র। এমনকি সুন্দরবনের একটি অংশেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। বাড়িঘর নির্মাণে চাঁদা, উন্নয়ন কাজে বখরা, ছিনতাই, মাদক, কাঠ পাচার, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এখন এই বাহিনীর হাতে। প্রায় প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও ঘটছে হামলা-নির্যাতনের ঘটনা। এ নিয়ে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, আতঙ্কে রয়েছেন রাজনীতিকরা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নূর আজিম বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যৌথ বিবৃতি দিতে বাধ্য হয়েছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

দৈনিক কালবেলার অনুসন্ধানে নূর আজিম বাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মতো অনেক গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে। যদিও অনেক মামলায় ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন। তারা প্রকাশ্যে না বললেও প্রতিবেদকের কাছে বর্ণনা করেছেন আজিম বাহিনীর নানা নির্মমতার কথা। এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে খুলনা অঞ্চলের বিভিন্ন থানায় প্রায় ২৫টি মামলার নথি পাওয়া গেছে। এর বাইরেও অনেক ঘটনা তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন, আজিম বাহিনীর বিরুদ্ধে গত পাঁচ-ছয় বছরে অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি রয়েছে হত্যা মামলা। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা ভয়ে মামলাও করতে যাননি।

জানা যায়, নূর আজিমের বাড়ি খুলনা নগরীর টুটপাড়ার জাকারিয়া রোডে। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা নূর আজিমের বাবা শানু মুহুরি একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। এলাকাবাসী বলছে, ২০১৭ সালের দিকে কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে অপরাধ জগতে হাতেখড়ি আজিমের। নগরীর লবণচরা এলাকায় ওই কিশোর গ্যাং বহু অপরাধে জড়িত ছিল। এ নিয়ে ওই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল। তবে মহানগর আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছত্রছায়ার কারণে ওই সময় আজিমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ কারণে দিনে দিনে আরও বেপরোয়া ওঠে।

এলাকাবাসী বলছে, নগরজুড়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতেই ওই কাউন্সিলর তৈরি করেন কিশোর গ্যাং, যার নেতৃত্বে ছিলেন নূর আজিম। সেই গ্যাং ধীরে ধীরে ডালপালা মেলেছে। ছোট ছোট অপরাধ দিয়ে শুরু হলেও এখন কথায় কথায় খুন-খারাবিতে জড়িয়ে পড়ছে আজিম বাহিনী।

অনুসন্ধান বলছে, আজিম বাহিনীর বর্তমান সদস্য শতাধিক। এর মধ্যে বেশি আলোচনায় রয়েছে আজিমের বন্ধু বিসমিল্লাহ, ভাই সাগর, বাহিনীর সদস্য বিকুল, মাসুদ, মিরাজ, নাহিদ, তৌহিদসহ কয়েকজন। মহানগর এবং আশপাশের সব অপকর্মেই এদের তৎপর দেখা যায়।

বিভিন্ন মামলার নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রায় সবগুলোতেই রয়েছে এসব সহযোগীর নাম। আজিম বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে রয়েছে তার বন্ধু বিসমিল্লাহ। সে নগরীর টুটপাড়া এলাকার আতিয়ার রহমানের ছেলে।

নগরবাসী বলছে, খুলনাজুড়ে সক্রিয় থাকলেও নগরীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ আজিম বাহিনীর। বিশেষ করে নগরীর টুটপাড়া, চানমারী, লবণচোরা, বান্দা, আশি বিঘা, নিজ খামার, রিয়া বাজার ও সোনাডাঙ্গা এলাকায় আজিমের মুখের কথাই আইন। এই এলাকাগুলো সরাসরি দেখভাল করে নূর আজিমের ছোট ভাই সাগর ও বাহিনীর সদস্য নাহিদ। এই বাহিনীর অস্ত্র দেখাশোনার দায়িত্বও সাগরের ওপর। সাগরের সহযোগী হিসেবে কাজ করে নাহিদ। গত বছরের ২৯ অক্টোবর বিদেশি অস্ত্র, গুলিসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল নাহিদ।

আজিম গ্রুপের প্রধান শুটার হিসেবে কাজ করে বিকুল। তার নামে খুলনার বিভিন্ন থানায় অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে। বিকুল ছাড়াও এই বাহিনীতে শুটার হিসেবে আছে মাসুদ ও মিরাজ। দুজনের নামেই একাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, নগরীর কয়েকটি জায়গায় আজিম বাহিনী গড়ে তুলেছে টর্চার সেল। বিভিন্ন দাবিতে মানুষকে ধরে এনে এখানেই নির্যাতন চালানো হয়। টর্চার সেলে নির্যাতন সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিও এবং ছবি দৈনিক কালবেলার কাছে রয়েছে। এসব ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যায়, ভুক্তভোগীদের দুই হাত পিঠমোড়া করে বেঁধে নির্যাতন চালাচ্ছে আজিম বাহিনী। তাদের হাতে আছে নানা ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র।

একটি ভিডিওতে আজিম বাহিনীর সদস্যদের নতুন আসা অস্ত্রের চালান খুলে নাড়াচাড়া করতে দেখা যায়। আবার কোনো কোনো ভিডিওতে দেখা যায়, প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে এই বাহিনীর সদস্যরা। এর বাইরে আতঙ্ক ছড়াতে অনেক সদস্য আবার ফেসবুকে পিস্তলসহ ছবি আপলোড করে। এমনই একজন আব্দুল গফুর। সম্প্রতি দুটি পিস্তল কোমরে গুঁজে ফেসবুকে ছবি দেয় সে। সাগর নামে আরেক সদস্য নতুন কেনা পিস্তল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে—এমন ভিডিও নিজেই ফেসবুকে দিয়েছে।

প্রকাশ্যে গুলি: গত বুধবার (৪ অক্টোবর) রাতে লবণচরা থানা এলাকায় ঘের ব্যবসায়ী সিহাব ও শাকিলকে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে। হাসপাতালে গিয়ে শাকিলের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘রাতে হঠাৎ দু-তিনজন এসে সরাসরি গুলি করতে শুরু করে। তারা খুব কাছ থেকে কোমর ও পায়ে গুলি করে। অস্ত্রধারীদের মধ্যে কালা লাভলু নামে পরিচিত একজনকে চিনতে পারি। সে আজিম বাহিনীর সদস্য এবং পেশাদার খুনি।’

শাকিল অভিযোগ করেন, বুধবার রাতের ওই ঘটনার পরদিন লবণচরা থানায় মামলা করতে যান তার স্ত্রী তানিয়া; কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক প্রথমে মামলা নিতে গড়িমসি করেন। পরে মামলা নেওয়া হলেও আসামির তালিকা থেকে অনেককে কৌশলে বাদ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদী তানিয়া কালবেলাকে বলেন, ‘প্রথমে মামলা না নিয়ে আমার মোবাইল নিয়ে যায়। এরপর হুমকি-ধমকি দেয় পুলিশ। পরে বিভিন্নভাবে তদবির করে মামলা করতে পারলেও আসামি হিসেবে আমি যাদের আসামি করেছি, পুলিশ তাদের নাম দিতে চায়নি। তাদের ভাষ্য ছিল, গ্রেপ্তারের পর মামলায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

এ বিষয়ে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘আমি মামলা নিতে চাইব না কেন? বাইকে করে বাসায় লোক পাঠিয়ে ডেকে এনে মামলা নিলাম। তবে এরা সবাই বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য। সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেই ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে মামলা করা হয়েছে। এখন তারা যদি বলে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবে, এটা তো সম্ভব নয়। কারণ পুলিশের কাজ তো যাচাই-বাছাই করা।’

রিঙ্কু হত্যাচেষ্টা: এ বছর ২ মে লবণচরা এলাকায় কাঠ ব্যবসায়ী রিঙ্কুকে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় আজিম ও তার কয়েকজন অনুসারী। ঘটনার শিকার রিংকু কালবেলাকে জানান, নূরের সহযোগীরা তাকে কাঠের সঙ্গে মাদকের চালান লেনদেন ও বিক্রির এজেন্ট হওয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি প্রস্তাবে রাজি হননি। এজন্য তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। প্রাণে বেঁচে যাওয়া এখনো সেই ভয়ংকর স্মৃতি তাকে তাড়া করে জানিয়ে রিঙ্কু বলেন, ‘রাতে ঘুম ভেঙে যায়। আতঙ্কে চিৎকার করে উঠি। জানি না কতদিন এই দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়াতে হবে।’

পলাশ হত্যা: রিঙ্কুর মতো মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে ফেলে রেখে গেলেও ভাগ্য সহায় হয়নি সদ্যোজাত সন্তানের পিতা পলাশের। গত বছরের ২২ আগস্ট চানমারী এলাকায় খুন হন এই জাহাজ ব্যবসায়ী।

সন্তান হত্যার বর্ণনা দিয়ে পলাশের মা শিউলি বেগম কালবেলাকে জানান, পলাশকে আজিম ও তার বাহিনীর সদস্যরা হত্যা করেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই ঘটনার কয়েকদিন পর ৮ সেপ্টেম্বর লবণচরা থানায় মামলা হলেও প্রভাবশালী এক কাউন্সিলরের হস্তক্ষেপে নূর আজিমের নাম মামলার এজাহারভুক্ত করেনি পুলিশ। প্রধান অভিযুক্তকে আসামি না করায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার পলাশের ভাই রাব্বি কালবেলাকে বলেন, ‘মানুষ এখন এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে। বর্তমান পুলিশ কমিশনার যোগদানের পর আজিম বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে বলে সাধারণ মানুষ আশায় বুক বেঁধেছে।’

সিয়াম হত্যা: পলাশের মতোই পরিণতি বরণ করতে হয় এসএসসি পরীক্ষার্থী সিয়ামকে। পাঁচ বছর আগে সিয়ামকে তাদের বাহিনীতে যোগ দিতে বলেছিল নূর আজিমের সহযোগীরা। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা খেলার মাঠে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় সিয়ামকে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পরদিন খুলনার কৈয়া বাজার এলাকা থেকে সিয়ামের সহপাঠী রায়হান রাব্বি, আবু সাইদ ও ছোট রনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেসময় এরা সবাই ছিল নূর আজিমের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।

ইমন হত্যা: গত ৫ অক্টোবর নগরীর গোবরচাকা এলাকায় ইমন শেখ নামে এক রং মিস্ত্রিকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে রিভলবার ও গুলি।

নগরীর বাইরেও তৎপর ওরা: অনুসন্ধানে আজিম বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে হওয়া ২৫টি মামলার নথি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা থানায় হত্যা মামলা দুটি, মাদক মামলা ১০টি, হত্যাচেষ্টা মামলা ১৭টি, দ্রুত বিচার আইনে একটি, মানব পাচার একটি, নারী ও শিশু নির্যাতন একটি, রূপসা থানায় একটি, অস্ত্র আইন একটি ও একটি ডাকাতি মামলা।

এসব মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুধু খুলনা শহরে নয়, ভাড়াটে হিসেবে বাইরে গিয়ে মাদক কারবার ও সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায় আজিম বাহিনী। বাগেরহাটের রামপাল থানায় মাদক মামলা রয়েছে আজিম বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে আতঙ্ক: আজিম বাহিনীর অব্যাহত বর্বরতায় এখন খুলনার রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। মধ্যম সারির নেতারা এ নিয়ে ভয়ে মুখ খুলতে চান না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও মুখ ফুটে বলছেন না কিছুই। অন্তত ১০ জন জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। তারা প্রত্যেকেই বলছেন, মুখ খুলে নিজের ক্ষতি ডেকে আনতে চাই না। কারণ নগরীর প্রতিটি পাড়ায় এই বাহিনীর সদস্য রয়েছে।

এদিকে খুলনা মহানগরীজুড়ে অব্যাহত সন্ত্রাস এবং সাধারণ মানুষের আতঙ্কের বিষয়টি আমলে নিয়েছেন জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা ৬ অক্টোবর এক বিবৃতিতে এই অবস্থার অবসান ঘটিয়ে মানুষের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অবিলম্বে খুলনা মহানগরের এসব দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুনুর রশীদ, মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা এবং জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি খুলনা জেলার ৯টি থানা নিয়ে কাজ করি। এসব থানায় নূর আজিম বাহিনী বলে কিছু নেই।’

খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, ‘প্রতিটি থানা এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব আছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য। কোন মাফিয়া চক্র, কিশোর গ্যাং ব্যবহার করে যাতে জমি দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য নূর আজিমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করা হয়। তবে নগরীর টুটপাড়ার জাকারিয়া রোডে অবস্থিত বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। এরপর তার সহযোগীদের মাধ্যমেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সড়ক পরিহার করে সভা-সমাবেশ করার অনুরোধ ডিএমপি কমিশনারের

আমরা সবাই বাংলাদেশি, এর বাইরে কোনো পরিচয় নেই : জিলানী

জামদানি পল্লী পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

উৎসবমুখর পরিবেশে নর্দান ইউনিভার্সিটিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ

বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক টাকা বেতনে নার্স নেবে কুয়েত

সংবিধানের ওপরে জুলাই সনদ প্রাধান্য পেতে পারে না : গণফোরাম

ঢাবি উপাচার্যের বক্তব্য ‘বিকৃতভাবে’ উপস্থাপনের প্রতিবাদ কর্তৃপক্ষের

হাজার হাজার মার্কিনি নিচ্ছেন মেক্সিকোর নাগরিকত্ব

যাদের জনসমর্থন নেই, তারাই পিআর চায় : এসএম জাহাঙ্গীর

আরও একটি ট্রফি হাতছাড়া রোনালদোর

১০

জাতীয় সনদে জনআকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে : আ স ম রব

১১

ভালো কাজের প্রতিযোগিতার আহ্বান সাদিক কায়েমের

১২

মানুষ কেন হাই তোলে? গবেষণায় জানা গেল নতুন তথ্য

১৩

বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন নে‌ত্রী : ফরহাদ মজহার

১৪

মওলানা ভাসানী সেতুর বিদ্যুতের তার চুরি, থানায় মামলা

১৫

১২ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

১৬

কাঠগড়ায় টুলে বসলেন মাইটিভির নাসির, ৪০ মিনিট দাঁড়িয়ে ক্ষোভ আনিসুল-মেননের

১৭

মির্জা ফখরুলের কাছে যেসব প্রশ্ন রাখলেন ফুয়াদ

১৮

মেঘনার দুই ইলিশ বিক্রি সাড়ে ১১ হাজার

১৯

ভারত বুঝতে পেরেছে, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বটা কেন দরকার

২০
X