দেড় বছর আগে সঞ্চয়পত্র খুলতে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকার সাব-পোস্ট অফিসে যান মাফিয়া বেগম। সঞ্চয়পত্রের জন্য জমা দেন ৬ লাখ টাকা। তবে মাসের পর মাস ঘুরেও এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত বরিশাল প্রধান ডাকঘরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কিছুদিন আগে টাকা ফেরত পেয়েছেন। তবে ডাক বিভাগে আর সঞ্চয় করা হয়নি তার।
মাফিয়া বেগম কালবেলাকে বলেন, ‘গ্রাহক হিসেবে আমার সঙ্গে অন্যায় করেছে ডাক বিভাগের লোকজন। তাদের অনিয়মের কারণে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারিনি। দেড় বছর ধরে আমার টাকা নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন ওই অফিসের আলাউদ্দিন সিকদার।’
শুধু মাফিয়া বেগম নন, ডাক বিভাগের সেবা নিতে গিয়ে এমন হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সারা দেশের অসংখ্য মানুষ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে দিন দিন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে ডাক বিভাগের সুনাম।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষের আস্থা আর বিশ্বাসের শীর্ষে ছিল ডাক বিভাগের সঞ্চয়পত্র। মুনাফার হার বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থ এখানে জমা রাখতেন। তবে বদলেছে দিন। ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে সেবাপ্রত্যাশীরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
বরিশাল নগরীর আরেক বাসিন্দা উৎপলা রানী। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বরিশাল মেডিকেল সাব-পোস্ট অফিসে গিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে ১০ লাখ টাকা দেন এই গৃহিণী। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আলাউদ্দিন নামে ওই ব্যক্তি আমার টাকা ফেরত দিয়েছেন। এতেই আমি খুশি। আমার সঞ্চয়পত্রের বই করা হয়নি। দুই মাস পরপর নতুন তারিখ দিলেও বই পাইনি। আমি একা নই, বহু মানুষের মুখে এমন অভিযোগ শুনেছি। আমরা সঞ্চয়পত্র করতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছি। কম্পিউটার নষ্টসহ অফিসিয়াল নানা ঝামেলা দেখিয়ে ৯ মাসেও বই না দিয়ে তিনি হয়রানি করেছেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সেবা না পাওয়া দুঃখজনক।’
এসব অভিযোগের তদন্ত করছে বরিশাল প্রধান ডাকঘর। সম্প্রতি বরিশাল মেডিকেল সাব-পোস্ট অফিস আকস্মিক পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন কর্মকর্তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাব-পোস্ট অফিসটিতে গিয়ে বরিশাল প্রধান ডাকঘরে কর্মরত আর্ম গার্ড আলাউদ্দিন সিকদারের একটি আলমারি পাওয়া যায়। ওই কর্মচারীকে ডেকে আলমারি খুলে জামাল হোসেন নামের একজন গ্রাহকের পাস বই (এফডি নং ৬৭২৮৫), একটি রেজিস্টার, গ্রাহকের স্বাক্ষরিত ১৮টি উত্তোলন ফর্ম এবং একটি সঞ্চয়পত্রের টোকেনসহ কিছু কাগজপত্র জব্দ করেন কর্মকর্তারা।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই পাস বইয়ে ২৮ লাখ ৫০ হাজার ১০০ টাকা জমা লেখা রয়েছে। এর মধ্যে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর ২৬ লাখ টাকা এবং ৩০ ডিসেম্বর ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেখানো হয়েছে। কিন্তু ওই গ্রাহকের নামে ডাকঘরের লেজারে মাত্র ১০০ টাকা স্থিতি পাওয়া গেছে। এভাবে দুই জায়গায় দুই রকম জমা দেখানো অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও গুরুতর অনিয়ম বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পরিদর্শনকালে অফিসে আসা কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলাউদ্দিন সিকদার তার বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগ করে অনৈতিকভাবে বরিশাল মেডিকেল সাব-পোস্ট অফিসে অবস্থান করতেন। তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের হিসাব খেলার কথা বলে টাকা সংগ্রহ করতেন। কিন্তু তিনি অনেককে কোনো ধরনের পাস বই বা সঞ্চয়পত্র দেননি। পরে এরকম কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।’
এ ছাড়া গ্রাহককের কাছ থেকে এসবি-৭ ফর্মে উভয় পাশে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়াদ পূর্তির আগেই গ্রাহকের অজান্তে টাকা উত্তোলনের প্রমাণ মিলেছে। শ্রাবণী সাহা নামে এক গ্রাহক (এফডি নং ১৫২৬৯৭) তার হিসাবে জমা ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের জন্য বর্তমানে কর্মরত এসপিএম নুরুল ইসলামের কাছে এসবি-৭সহ পাস বই জমা দেন। কিন্তু নুরুল ইসলামের কাছ থেকে গত ২০ সেপ্টেম্বর আলাউদ্দিন সিকদার পাস বইটি জোরপূর্বক নিয়ে যান। পাস বইটির লেজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বইটি থেকে ৫ এপ্রিল গ্রাহকের অজান্তে মুনাফা ছাড়া ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পাস বইটি নুরুল ইসলামের কাছ থেকে নিয়ে আলাউদ্দিন সিকদার তৎকালীন এসপিএম শহিদুল ইসলামকে দিয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর তারিখের আগের তারিখে (ব্যাকডেট) স্বাক্ষর করান, যা শহিদুল ইসলাম মৌখিকভাবে স্বীকার করেছেন।
এদিকে ডাকঘরে লাভজনক বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডাক বিভাগের দুই কর্মচারীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি বরিশাল বিভাগের প্রধান পোস্ট মাস্টার আবদুর রশিদ তাদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। অভিযুক্তরা হলেন সাব-পোস্ট মাস্টার সহিদুল ইসলাম ও আর্ম গার্ড আলাউদ্দিন। তারা দুজন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ সাব-পোস্ট অফিসে দায়িত্বকালে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, চায়ের দোকান থেকে ১৯৯৫ সালের দিকে অস্থায়ী ভিত্তিতে বরিশাল পোস্ট অফিসে দারোয়ানের চাকরি শুরু করেন আলাউদ্দিন। এরপর পোস্ট অফিসের আর্ম গার্ড পদে নিজের চাকরি স্থায়ী করে নেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি বাংলাদেশ পোস্ট অফিস কর্মচারী ইউনিয়নের বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর থেকেই সম্পদের পাহাড় গড়তে থাকেন আলাউদ্দিন। নিজ এলাকায় তার রয়েছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের আলিশান বাড়ি। রয়েছে ৬ কোটি টাকার আবাদি জমি। একটি পানি ও সরিষার তেলের কারখানার মালিক তিনি। আত্মীয়-স্বজনের নামেও নিজের টাকায় কিনে রেখেছেন অনেক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলাউদ্দিনের একজন নিকটাত্মীয় কালবেলাকে বলেন, ‘এ অঞ্চলে আলাউদ্দিন অন্যতম ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। অঢেল সম্পদের পাশাপাশি এখন নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন অর্থ। অথচ তিনি ডাক বিভাগের সামান্য বেতনের কর্মচারী। সাধারণ মানুষকে ফুসলিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন তিনি।’
স্বজনরা জানান, সুচতুর আলাউদ্দিন সব সম্পদ নিজ নামে করেননি। বেনামে অনেক সম্পদ গড়েছেন। এলাকার সবাই তার অঢেল সম্পদের বিষয়ে জানলেও খাতা-কলমে সম্পদের পরিমাণ খুবই কম।
অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে আর্ম গার্ড আলাউদ্দিন সিকদার কালবেলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো গ্রাহক যদি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করে থাকেন, তার সব দায় মাথা পেতে নেব। আমার ছেলে ও আমি চাকরি করি। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য করি। এত কিছু মানুষের সহ্য হয় না। তারা আমার পেছনে লেগেছে। ডাক বিভাগের পোস্ট মাস্টার বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আমার বিরুদ্ধে গ্রাহকের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার জন্য আমি দায়ী থাকবে।’
বরিশাল বিভাগের প্রধান পোস্ট মাস্টার আবদুর রশিদ বলেন, ‘প্রতারিত কয়েকজন গ্রাহক পোস্ট অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। ডাক বিভাগের খুলনা কার্যালয়ের একটি দল তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সহিদুল ও আলাউদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।’
জানা গেছে, সারা দেশে পোস্ট অফিস থেকে মাঝেমধ্যেই নানা কৌশলে গ্রাহকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ধরা পড়ছে। অনেক ঘটনা থাকছে আড়ালেই। ভুক্তভোগীরা বলছেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়লে ডাক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বিষয়টি বেশি আলোচিত হলে নেওয়া হয় লোক দেখানো বিভাগীয় ব্যবস্থা। গঠন করা হয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। দীর্ঘ সময় পর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আর কথিত সেই তদন্ত প্রতিবেদন এমনভাবে দেওয়া হয়, সেগুলোর ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক ও কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া সম্ভব হয় না। এসব কারণে সরকারি ও গ্রাহকের অর্থ হরিলুট বন্ধ হচ্ছে না।
ডাক বিভাগের একাধিক নির্দেশনা ও চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থ লোপাটে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। সাব-পোস্ট অফিসের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে কয়েক মাস আগে পোস্ট অফিস ও সাব-পোস্ট অফিস বরাবর একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর শিরোনাম ছিল ‘ঢাকার মিরপুর সাব-পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার নাজমুল ইসলাম শাহীনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫৫ লাখ সরকারি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সংক্রান্ত।’
বছর দুই আগে ২০২১ সালে ঢাকা জিপিও থেকে ৬ কোটি টাকা ‘উধাও’ হয়ে যায়। এক শ্রেণির কর্মকর্তা অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে হাতিয়ে নেয় এই অর্থ। সে সময় ঢাকা জিপিওর দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন অতিরিক্ত পোস্ট মাস্টার খন্দকার শাহনূর সাব্বির। ভ্যালু পেয়েবল মানি অর্ডারের (ভিপিএম) মাধ্যমে সরানো হয়েছিল এই অর্থ। সে সময় পোস্ট মাস্টার (ট্রেজারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল বাতেন। ট্রেজারার ছিলেন এমদাদুল হক। তারা ট্রেজারির নিয়ন্ত্রণ করতেন। ৬ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলা হয়। ওই মামলায় বেছে বেছে আসামি করা হয় খন্দকার শাহনূর সাব্বিরের রোষানলে থাকা ব্যক্তিদের। কারাগারে পাঠানো হয় এমদাদুল হককে। ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যান খন্দকার শাহনূর সাব্বির ও ট্রেজারি পোস্ট মাস্টার আব্দুল বাতেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে দুদক। এ ছাড়া উত্তরা পোস্ট অফিস, বনানী পোস্ট অফিস, গুলশান পোস্ট অফিসেও রয়েছে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা।
ডাক বিভাগের যশোর প্রধান ডাকঘরের সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল আবদুল বাকীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ডাক বিভাগের ১৭ জন গ্রাহকের সঞ্চয় হিসাব ব্যবহার করে এসব টাকা তুলে নিয়েছেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খুলনার পোস্ট মাস্টার জেনারেল শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল যশোর প্রধান ডাকঘরে অনুসন্ধানে আসে। প্রাথমিক তদন্তে আত্মসাতের সত্যতা পাওয়ায় তাকে আটক করে পুলিশ।
চট্টগ্রামের সঞ্চয় শাখায় গ্রাহকদের আমানত থেকে ২৯ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে ডাক বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রাহকদের অর্থ সঠিক হিসাবের পরিবর্তে ভুয়া হিসাবে জমার পর উত্তোলন করেন তারা। যোগসাজশের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ৯টি সঞ্চয়ী ও একটি মেয়াদি হিসাবের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ অভিযোগে চট্টগ্রাম জেনারেল পোস্ট অফিসের জড়িত কয়েকজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রথমে জিপিওর অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় পোস্ট অফিসে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ৩ গ্রাহকের জমাকৃত অর্থের ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জিপিওর ২ কর্মীর দায় খুঁজে পায় নিরীক্ষা বিভাগ। পাশাপাশি জালিয়াতি চক্রের খোঁজও পায় সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের ২৭ আগস্ট তাদের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। জিপিও চট্টগ্রাম মেট্রো সার্কেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন দুজনকে অভিযুক্ত করে একটি ডায়েরি দায়েরের পর দুদক তদন্ত শুরু করে। তদন্ত চলাকালে দুদক ওই চক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আরও ৩ জনকে শনাক্ত করে। এই চক্রটি পোস্ট অফিস থেকে ২৯ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার ৩০০ টাকা জালিয়াতি করে আত্মসাৎ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায় তদন্তে।
সার্বিক বিষয়ে ডাক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কালবেলাকে বলেন, ‘ডাক বিভাগের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্থ আত্মসাৎসহ কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে তাদের শনাক্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপর দুদকে মামলা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘যে অপরাধের যে শাস্তি সেই শাস্তি নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর, যাতে অন্যরা এটা দেখে সাবধান হয়ে যায়। এ ছাড়া অনিয়মের নতুন কোনো ঘটনা আছে কি না, তা তদন্তে বিভিন্ন টিম সরেজমিন কাজ করে। গ্রাহক প্রতারিত হয়ে থাকলে সেগুলো আমরা গুরুত্বসহকারে দেখি। সরকারি বিধিবিধানের মধ্যে থেকে গ্রাহক প্রতারিত হয়ে থাকলে তার দাবি নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়। আর ডাক বিভাগের প্রতি সাধারণ গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে সচেতনতামূলক কর্মসূচিও রয়েছে।’