যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা বন্ধে চাপ সৃষ্টি করেছে। ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে সিরিয়ার সরকারি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ এবং দামেস্কের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছে।
এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে জানান, ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে একটি সম্ভাব্য নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছিল। তবে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার কারণে এটি এখন হুমকিতে পড়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলিদের বলেছি থামো এবং শান্ত হও। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে চাওয়া হয়েছে, ইসরায়েল যেন আলোচনার মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের পথ খোঁজে।’
সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশে সম্প্রতি সহিংসতা বেড়ে গেছে। সেখানে দ্রুজ সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বেদুইন গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিরিয়ান সেনাবাহিনী ট্যাংক মোতায়েন করে। এর পরপরই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ওই ট্যাংক ইউনিটগুলোতে হামলা চালায়। সিরিয়ার পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, ট্যাংক মোতায়েন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, ট্যাংকগুলো অস্ত্রশস্ত্রমুক্ত অঞ্চলে প্রবেশ করেছে, যেখানে ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সুয়েইদায় চলমান সংঘর্ষে অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছে। সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় আরও তিনজন নিহত ও ৩৪ জন আহত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে দেশের দ্রুজ সম্প্রদায়। তারা অভিযোগ করছে, সিরিয়াপন্থি মিলিশিয়া গোষ্ঠী সুয়েইদায় দ্রুজদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। ইসরায়েলে দ্রুজরা মোট জনসংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ হলেও তাদের রাজনৈতিক প্রভাব অনেক। পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় বহু ইসরায়েলি দ্রুজ অধিকৃত গোলান মালভূমির সীমানা পার হয়ে সিরিয়ার দিকে এগিয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের অভিযোগ সিরিয়ান সরকার দ্রুজদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে তা মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সমর্থিত নয়। বরং ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ বড় ভূমিকা রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্র সংযম দেখাতে বললেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার ঘোষণা করেছে, তারা সিরিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা পাঠাচ্ছে। উদ্দেশ্য, আরও হামলা চালানো এবং দ্রুজ জনগণের ওপর আক্রমণ ঠেকানো। এ পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
মন্তব্য করুন