শ ম রেজাউল করিম
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৪, ০৭:৫১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ঐতিহ্য, সংগ্রাম আর অর্জনে অম্লান আ.লীগ

ঐতিহ্য, সংগ্রাম আর অর্জনে অম্লান আ.লীগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ রাজনৈতিক দল। দলটি একদিকে যেমন অসাধারণ নেতৃত্ব ও জনআকাঙ্ক্ষার রাজনীতি চর্চার ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ, অন্যদিকে তেমনি বাঙালি জাতির অনন্য সব অর্জনের গর্বিত অংশীদার। এ রাজনৈতিক দলটিকে ঘিরেই একদিন শোষণ আর বঞ্চনার অবসানে মুক্তিকামী বাঙালি স্বাধিকারের স্বপ্ন বুনেছিল। আর আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতিটি সোপানে, বিশ্ব দরবারে বাঙালির মাথা উঁচু করা দাঁড়াবার প্রতিটি উপলক্ষে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম। তাই প্লাটিনাম জয়ন্তীর এ মাহেন্দ্রক্ষণে খানিকটা পৌঢ়ত্বেও আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মূল ধারার রাজনীতিতে পূর্বের সমলয়ে প্রাসঙ্গিক, সমান দাপুটে। বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশার প্রাপ্তিতে রূপায়ণ, নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে গণতন্ত্রের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে যাওয়া, আর্থসামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশে রূপান্তর—প্রতিটি ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের অনিবার্যতা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বিকেলে ঢাকার কেএম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলীম লীগ নামে যে দলটির আত্মপ্রকাশ হয়েছিল, সেটিই আজকের আওয়ামী লীগ।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্রমেই জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠা আওয়ামী লীগের নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি। আর এই দলটি সংগঠিত করা থেকে শুরু করে গৌরবময় উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত যিনি ছিলেন মূল চালিকাশক্তি, তিনি রাজনীতির কবি, ইতিহাসের কালজয়ী মহানায়ক, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সুদক্ষ নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণের বাতিঘর আর মুক্তিপাগল বাঙালির আশা-ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছিল। বাঙালি জাতির ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, বরং অপরিহার্য। বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের সৃষ্টি ও ধারাবাহিক সমৃদ্ধি একই সূত্রে গাঁথা। পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর আবার বিপর্যয়ের মুখে পড়া বাংলাদেশকে নতুন করে প্রাণসঞ্চার করেছেন বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনা। এখানেও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে আওয়ামী লীগের নাম। আধুনিক ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা একই বৃত্তে অবিচ্ছিন্ন সত্তা।

সর্বশেষ, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে সফলতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত দেড় দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও উদ্ভাবনী নেতৃত্বে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, তা অতীতের যে কোনো সরকারের চেয়ে বেশি। সবচেয়ে বড় যে বিষয় সেটি হলো, গত ১৫ বছরে শুধু যে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে তাই নয়, অদৃশ্য যে বড় উন্নয়নটি আমাদের হয়েছে, তা হলো আমাদের স্বপ্ন দেখার ও বাস্তবায়ন করার সাহস বেড়ে গেছে বহুগুণ। এ সময়ে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে, মানুষ আজ স্বপ্ন দেখে উন্নত জীবনের। স্বপ্ন দেখে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, রাজধানীতে মেট্রোরেল চালু করা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল চালু করা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করা, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আওয়ামী লীগ সরকারের এতসব মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন নতুন করে সাহসের সঞ্চার করেছে আমাদের মধ্যে। আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই বাংলাদেশ একটি গতিশীল ও দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিশ্বে আবির্ভূত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ এখন ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল বিশ্বে পদার্পণের অপেক্ষায় আছে। ২০৪১ সালের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য পূরণে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিকল্প নেই। বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক আওয়ামী লীগ দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত একটি রাজনৈতিক দল। এটি দিবালোকের সত্য ও স্পষ্ট। দলটি সদাসর্বদা দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে বদ্ধপরিকর। রাজনৈতিক ইতিহাসে সমৃদ্ধ দলটি বিশ্বাস করে এ দেশের মালিক জনগণ। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে দলটি সবসময় একনিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের ইতিহাস দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধিতে নিবেদনের ইতিহাস। গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষায়, সুসময়-দুঃসময়ে, দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সদাসর্বদা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবন্ধকতা জয় করে দৃপ্ত প্রত্যয়ে এগিয়ে যাওয়াই আওয়ামী লীগের ধর্ম। বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও বাঙালি জাতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের নিরন্তর সংগ্রাম অদ্যাবধি চলমান রয়েছে। যে সংগ্রামের সূচনা সে সময়কার তরুণ নেতা, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। আর যা দৃঢ় প্রত্যয়ে চলমান রেখেছেন বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বাঙালির অস্তিত্বের সংগ্রামে আর গৌরবময় সব অর্জনে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অনিবার্যতা চির অম্লান হয়ে থাকবে। প্লাটিনাম জয়ন্তীতে এ শুভ প্রত্যাশা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালির চির আকাঙ্ক্ষার একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বেঁচে থাক শত-সহস্র বছর।

লেখক: এমপি, সাবেক মন্ত্রী, সভাপতি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে ভিজিট করুন www.kalbela.com

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ছাত্রলীগ কর্মীকে ধরে পুলিশে দিল জনতা

রাস্তাতেই রাত কাটিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা 

কেমন কাটতে পারে আজকের দিন, জেনে নিন রাশিফলে

ভারতের ‘আরেকটি অভিযানের’ ভয় করছে পাকিস্তান

দুপুরে যেসব জেলায় ৮০ কিমি বেগে ঝড় হতে পারে

‘বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত এ বাড়ি থেকে যাব না’

পারস্য উপসাগর / ইরানের চাপে নাম পরিবর্তনের ভাবনা থেকে সরছে যুক্তরাষ্ট্র

আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া

ইসরায়েলকে ছাড় দিয়ে ইরানকে টার্গেট করছে যুক্তরাষ্ট্র, অভিযোগ আরঘচির

টিভিতে আজকের খেলা

১০

১৫ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১১

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১২

১৫ মে : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৩

সীমান্তে বজ্রপাতে বিজিবির সদস্যের মৃত্যু

১৪

সীমান্তের ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানি, ভুয়া এনএসআই সদস্য আটক

১৫

হাসপাতাল থেকে পালালেন ছাত্রলীগ নেতা, ৪ পুলিশ ক্লোজড

১৬

৪ মাসের শিশু চুরি, ৬ দিন পর গ্রেপ্তার নিঃসন্তান দম্পতি 

১৭

চুরির সন্দেহে কিশোরকে মারধর, পরে বস্তাবন্দি করে ফেলা হলো নদীতে

১৮

সীমান্তে ‘পুশইন’ করা সেই ৪৪ বাংলাদেশিকে থানায় হস্তান্তর

১৯

এয়ার টিকিট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মতবিনিময় সভা 

২০
X