পাঁচ বছর থেকে নিজ বাড়িতেই অবরুদ্ধ জীবনযাপন করছে বৃদ্ধ নুর হোসেনের পরিবার। বাড়ির প্রবেশ পথ আটকে দিয়েছেন প্রতিবেশী। অবরুদ্ধ হওয়ায় প্রতিবেশীর দেয়াল টপকে চলাচল করছেন পরিবারের সদস্যরা। মেয়ের বিয়ের দিন হাত পায়ে ধরলেও রাস্তাটি খুলে দেয়নি প্রতিপক্ষ। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্র দপ্তরির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী মৃত সালামত আলীর ছেলে মো. নুর হোসেন (৫৬)। তিনি প্রতিকারের আশায় ইউএনও অফিসে আবেদন করেন।
সরেজমিন দেখা যায়, নুর হোসেনের বাড়ির সামনের রাস্তাটি কাঁটাতারের বেড়ায় ঘেরা। পরিবারটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ, নুর হোসেনের স্ত্রী বৃদ্ধ খুরশিদা বেগম বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে প্রতিবেশীর দেয়াল টপকে পার হচ্ছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা সদরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঘনপুকুর পাড় এলাকায় নুর হোসেন জমি কিনে ২০ বছর ধরে বসবাস করছেন। ৫ বছর আগে এলাকার মো. ফরিদ, মো. আবুল কালাম, মো. জসিম, মো. মুছাসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জন লোক নুর হোসেনের বাড়িতে প্রবেশের সরকারি রাস্তাটি জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে প্রতিবেশীর পাকা দেয়ালে বাঁশের সিঁড়ি দিয়ে পরিবারের সদস্যরা চলাচল করছে। একাধিকবার সালিশি বৈঠকেও বিষয়টি সমাধান হয়নি। নুর হোসেনের মেয়ের বিয়ের দিন রাস্তাটি খুলে দিতে ফরিদের হাত পায়ে ধরেও লাভ হয়নি।
ভুক্তভোগী নুর হোসেনের স্ত্রী খুরশিদা বেগম বলেন, সালিশি বৈঠকে আমি তাদের পায়ে ধরেছি, তারপরও রাস্তাটি খুলে দেয়নি। আমার মেয়ের বিয়ের দিন বারবার বলেও রাস্তা খুলে না দিলে পাশের ঘরে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করি। এই বৃদ্ধ বয়সে আমি আর দেয়াল টপকাতে পারছি না।
নুর হোসেন বলেন, আমি হার্টের রোগী, গরিব অসহায় মানুষ, টাকা দিতে চাইলেও রাস্তাটি খুলে দিচ্ছে না। স্ত্রী, তিন মেয়ে, দুই ছেলে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় আমরা তাদের সঙ্গে পেরে উঠিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন বলেন, পরিবারটি অসহায়, অনতিবিলম্বে বৃদ্ধার পরিবারের চলাচলের রাস্তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. ফরিদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা করেছি। কাগজপত্রে সিদ্ধান্ত হবে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ইউএনওর জায়গা নয়, আমারও অনেক সাংবাদিক রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে দলিলপত্র দেখে আইনগতভাবে সমাধান করা হবে।