

বাংলাদেশে গত দেড় বছরে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি গুম বা খুনের অভিযোগ তুলনামূলকভাবে কম শোনা গেলেও, মানবাধিকার সংস্থা ও কর্মীদের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অজ্ঞাতনামা লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি, নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা এবং মব সন্ত্রাস।
তাদের অভিযোগ, এই সময় মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশজুড়ে মাজার, দরগা ও বাউলদের ওপর হামলা ও নিপীড়ন ক্রমেই বেড়েছে, তবে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
আগের সরকারের সময়ে ঘটে যাওয়া গুম ও খুনের ঘটনার বিচারের উদ্যোগ ইতোমধ্যেই নেওয়া হয়েছে; র্যাবসহ কিছু সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে। এ ছাড়া, গুমসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদেও স্বাক্ষর করেছে সরকার।
এর আগে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র র্যাব ও এর ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ওই সময় সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও সোচ্চার হয়।
মানবাধিকার সংস্থা ও অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গুম কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন জানিয়েছেন, যদিও কিছু ক্ষেত্রে গত দেড় বছরে উন্নতি হয়েছে, তবুও সামগ্রিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। তিনি মনে করেন প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)-এর সম্পাদক সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো ‘অজ্ঞাতনামা লাশ’। পাশাপাশি মব সন্ত্রাস দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে।
অন্যদিকে, সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, গুম ও খুনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্কারের জন্য সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার এগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিলে দেশের মানবাধিকার সংস্কৃতির ক্রমাগত উন্নতি সম্ভব হবে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা
মন্তব্য করুন