কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হাসপাতালগুলো হঠাৎ চাপ সামলাতে প্রস্তুত ছিল না

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত
হাসপাতালগুলো হঠাৎ চাপ সামলাতে প্রস্তুত ছিল না

রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর কয়েকটি হাসপাতালে হঠাৎ বেশি রোগী, স্বজন ও উৎসুক জনতার চাপে চিকিৎসাসেবা গুরুতরভাবে ব্যাহত হয়েছে। এত বিপুলসংখ্যক দগ্ধ ও আহত রোগী একসঙ্গে সামলানোর মতো প্রস্তুতি ছিল না এসব হাসপাতালের। চিকিৎসক, নার্স ও সহায়তাকারীরা ভীষণ চাপের মুখে পড়েন, অনেক জায়গায় রোগীকে দ্রুত ভর্তির আগেই বাধার মুখে পড়তে হয়েছে স্বজন ও সাধারণ মানুষের ভিড়ে। এ অবস্থায় কোথাও কোথাও চিকিৎসাসেবা কার্যত ভেঙে পড়ে।

বিমান দুর্ঘটনার পর দুপুর থেকেই ঘটনাস্থলের কাছাকাছি উত্তরার আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়া শুরু হয়। একসঙ্গে এত দগ্ধ রোগী ওই হাসপাতালের আগে কখনো সামলাতে হয়নি। হাসপাতালটিতে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু হলেও স্বজন ও নেতাকর্মীর ভিড়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। অনেক দগ্ধ রোগীকে সময়মতো ভেতরে প্রবেশ করানোই যায়নি। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এ এস এম রাকিবুল ইসলাম আকাশ বলেন, ‘আমাদের এখানে ১২০ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। বেশিরভাগের শরীরের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। রোগীদের অধিকাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।’

দুপুরের পরপরই শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে শুরু হয় আহতদের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ভর্তি। আইএসপিআরের সর্বশেষ তথ্যমতে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৭১ জন দগ্ধ ও আহত ব্যক্তি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুধু জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন, যাদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউটে স্বজন ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি অচল হয়ে পড়ে। চিকিৎসা সরঞ্জাম, রক্তের চাহিদা, বেড ব্যবস্থা এবং জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনেক বেগ পেতে হয়।

এ অবস্থায় বিকেলে হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এটি বড় ধরনের একটি দুর্ঘটনা। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজ করছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের সঙ্গেও সমন্বয় করে রোগীদের ওখানে পাঠানো হচ্ছে।’ তিনি জানান, দগ্ধদের বেশিরভাগের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা তাদের চিকিৎসা আরও জটিল করে তুলছে।

আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আটজন, বার্ন ইনস্টিটিউটে তিন, সিএমএইচএতে ১৭, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এক, উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতালে ১১, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৬০ এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন।

অন্যদিকে, দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহতদের জরুরি চিকিৎসা এবং রক্তের প্রয়োজন মেটাতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে হটলাইন চালু করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীও রক্তদাতাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে এবং বিমানবাহিনীর রেকর্ড অফিসে ২৪ ঘণ্টা চালু জরুরি সেল খোলা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ০১৭৬৯৯৯৩৫৫৮-এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ভয়াবহভাবে দগ্ধ হয়। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করেছে সরকার এবং ঘটনার তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২৮ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

চলন্ত বাসের খোলা লকারের ধাক্কায় যুবক নিহত

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ

পাবনায় নির্বাচনী প্রচারণায় জামায়াতের হামলার তীব্র নিন্দা বিএনপির

পুষ্টিগুণে ভরপুর রোজেল পানীয়

প্রশাসন ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক : ডিসি অন্নপূর্ণা

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

আ.লীগ নেতা মুকুল গ্রেপ্তার

বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পথে প্রাণ গেল কলেজশিক্ষার্থীর

১০

দলের প্রশ্নে আমরা সবাই এক : নজরুল ইসলাম আজাদ

১১

নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে ৬০ লাখ টাকা মু‌ক্তিপণ দাবি

১২

মেসির ভারত সফরে যুক্ত হলো আরও একটি শহর

১৩

বাকৃবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

১৪

শিশু আফিয়ার জন্য তারেক রহমানের বিশেষ উপহারের ঘর নির্মাণ শুরু

১৫

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতল পর্তুগাল

১৬

পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না নাঈমের

১৭

সবাই মিলেমিশে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলব : সেলিমুজ্জামান

১৮

সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা বাসে আগুন

১৯

বেপরোয়া বাসচাপায় প্রাণ গেল নানি-নাতনির

২০
X