রাজধানীর ডেমরায় প্রায় এক সপ্তাহ আগে ছয়তলা একটি ভবন পাশের আরেকটি ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। হেলে পড়া ভবনটির সাতটি ফ্ল্যাটে প্রায় ৩০ জন মানুষের বাস। যে কোনো সময় ভবনটি ধসে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় গতকাল রোববার দুপুরে এটি খালি করে সিলগালা করার নির্দেশ দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ। এর কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভবনটি ছেড়ে সব বাসিন্দা চলে গেছেন।
গতকাল দুপুরে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ডেমরার হাজীনগর এলাকার বাইতুল কাওছার জামে মসজিদসংলগ্ন হেলে পড়া ভবনটি পরিদর্শনে যান ডিএসসিসির জোন-৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান। পরিদর্শন শেষে ভবনটি খালি করার নির্দেশ দেন তিনি।
খলিলুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় ম্যানশন ভবন নামের বাড়িটির সব বাসিন্দাকে এটি খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়। কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আগেই আমরা ভবনটি সিলগালা করে দিয়েছি। ভবনের মালিক যদি স্বীকৃত ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টের মাধ্যমে ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা দেন, তবে ভবনের ভবিষ্যৎ ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। না হলে সেটিকে ব্যবহারের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, রাজউক, সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ভবন থেকে লোকজনকে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ভবনের সকল ধরনের লাইন কেটে ফেলা হয়েছে, এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস সহায়তা করছে। সরেজমিন দেখা গেছে, ডেমরার হাজীনগর এলাকার বাইতুল কাওছার জামে মসজিদ-সংলগ্ন মো. শহিদ মিয়ার বাড়ি পাশের আরেকটি বাড়ির ওপর হেলে আছে। ২০০০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হেলে পড়া ভবনটির অবস্থান মধ্য হাজীনগরের প্রবেশমুখে হওয়ায় সড়কে চলাফেরা করা সাধারণ মানুষও ঝুঁকিতে আছে। যে ভবনের ওপর এটি হেলে পড়েছে, সেটির বাসিন্দারাও আতঙ্কে আছেন।
এ বিষয়ে বাড়ির মালিক শহিদ মিয়া বলেন, ‘আমি বিদেশে থেকে সারা জীবন কষ্ট করে এই ভবন তৈরি করেছি। এটাই আমার শেষ সম্বল। কোনো ধরনের নির্মাণ ত্রুটি ছিল না ভবন নির্মাণে। এখন আমি কী করব বুঝতে পারছি না। ভবনটি ২০০০ সালের দিকে তৎকালীন সারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিয়েই নির্মিত হয়।’
মন্তব্য করুন