

অন্ধত্ব বাংলাদেশে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে দেশে অন্ধ বা চোখে দেখতে পান না—এমন লোকের সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এর মধ্যে ৫ লাখের মতো কর্নিয়াজনিত অন্ধ। প্রতি বছর নতুন করে তাদের সঙ্গে আরও প্রায় ৪০ হাজার মানুষ যুক্ত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আজ রোববার দেশে পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’।
প্রতি বছর ২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত হয়ে থাকে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির উদ্যোগে দিবসটি দেশব্যাপী পালিত হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘রক্তদানে হয় না ক্ষতি, চোখ ছুঁয়ে যাক চোখের জ্যোতি’।
১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব্লাড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৫ সালে সন্ধানী আয়োজিত প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ২ নভেম্বরকে ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ ঘোষণা করেন।
সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির মহাসচিব ডা. মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ মৃত ব্যক্তি ও বেওয়ারিশ মৃতদেহ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে আসছে। সংগৃহীত কর্নিয়া সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর চোখে প্রতিস্থাপন করে আসছেন তারা। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিস্থাপিত সব কর্নিয়াই সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির মাধ্যমেই সংগৃহীত। একজন মানুষের কর্নিয়া আরেকজন কর্নিয়াজনিত অন্ধ মানুষের চোখে প্রতিস্থাপন করলে সেই অন্ধ মানুষটি পৃথিবীর আলো দেখতে পান। এ তথ্য ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে কাজটি অনেক সহজ হবে এবং কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করে বিশ্বে নজির স্থাপন করা যাবে।
সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি দেশে কর্নিয়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সরবরাহকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৮৮টি কর্নিয়া সংগ্রহের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫২৫ জন অন্ধ মানুষের চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পেরেছে।
দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল ৮টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসাপাতাল চত্বরে গিয়ে শেষ হবে। এদিকে, সকাল ৯টায় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের লেকচার হলে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান।
মন্তব্য করুন