বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় করা মামলা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালত এ আদেশ দেন। বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক ফরিদ মিয়া বিষয়টি জানিয়েছেন। প্রশ্নফাঁসের এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় গত ২৬ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। গত ২২ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন পাটোয়ারী বিমানের ডিজিএম (সিকিউরিটি) মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারসহ ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন বিমানের শিডিউলিং সুপারভাইজার মাহবুব আলম শরীফ, সিকিউরিটি গার্ড আইউব উদ্দিন, এমটি অপারেটর মহসিন আলী, মিজানুর রহমান, ফারুক হোসেন, নজরুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মাসুদ, মাহবুব আলী, এনামুল হক, মাহফুজুল আলম, ট্রাফিক হেলপার আল আমিন, আ. মালেক, আলমগীর হোসেন, গাড়িচালক আব্দুল্লাহ শেখ, সাজ্জাদুল ইসলাম, এমএলএসএস তাপস কুমার মণ্ডল, জাহিদ হাসান, হারুন অর রশিদ, সমাজু ওরফে সোবাহান, জাকির হোসেন, বিএফসিসি অপারেটর সুলতান হোসেন, মুরাদ শেখ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ বেতারের গাড়ি চালক ফারুক হোসেন, জুয়েল মিয়া, রাজিব মোল্লা, অফিস সহায়ক আওলাদ হোসেন ও হেলপার জাবেদ হোসেন। চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর আনোয়ারসহ নিয়োগের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির চার সদস্য বিমানের জিএসইসহ অন্য পদের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ শুরু করেন। ওইদিনই বিমানের বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের প্রিন্সিপাল নজমুল হুদা ও ইঞ্জিনিয়ার কায়সার জামান নিজেদের অংশের প্রশ্নপত্র পেনড্রাইভে নিয়ে আসেন। এর কিছু সময় পর আনোয়ার জিএমের (অ্যাডমিন) রুমে আসেন। তারা প্রশ্নপত্র সেট করার পর মেজর তাইজ ইবনে আনোয়ারকে এর ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য দেখতে বলেন। তখন আনোয়ার ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখতে সমস্যা হচ্ছে বলে প্রিন্ট কপি চান। প্রিন্ট কপিটি তিনি চেকব্যাক করলে পরে তা মেশিন দিয়ে নষ্ট করা হয়। এরপর তারা জুনিয়র টেইলর কাম অ্যাপহোলস্টারসহ ৯টি টেকনিক্যাল পদের জন্য একটি প্রশ্নপত্র প্রণয়নের কাজ শুরু করেন। প্রশ্নপত্র চেকব্যাকের সময় মেজর আনোয়ার গোপনে মোবাইল ফোনে খসড়া প্রশ্নটির ছবি তুলে নেন। পরে সেটি প্রিন্ট করে আসামি মাসুদ ও জাহাঙ্গীর আলমকে দেন। প্রিন্ট কপি জাহাঙ্গীর আলম, হারুন অর রশিদ, মাহফুজুল আলম ও আওলাদ হোসেনের কাছে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশ্নটির ছবি আসামি জাহাঙ্গীর, মাসুদ, হারুন, এনামুল, মাহফুজুল, জাহিদ ও জাবেদের মোবাইল ফোনেও পাওয়া গেছে। গত বছরের ২০ অক্টোবর বিমানের প্রধান কার্যালয়ে জুনিয়র অপারেটর ক্যাজুয়াল পদের প্রশ্নপত্র ফটোকপির সময় এর ছবি তুলে নেন এমএলএসএস জাহিদ হাসান। পরে তা আওয়াদ ও সমাজুকে সরবরাহ করেন।
মন্তব্য করুন