পদযাত্রা কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে হামলায় আহত কুমিল্লা উত্তর জেলা ও মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের আখন্দ জেনারেল হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, এ ঘটনায় আহতদের তিনজন এখনো সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তাদের সঙ্গে দেখা করতে বা কথা বলতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার আকন্দ জেনারেল হাসপাতালের ম্যানেজার নাছির উদ্দিন ইকবাল বলেন, ১৪ জুলাই দুপুরে প্রায় ৩০ ব্যক্তি শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কোনো এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে জানান তারা। তাদের মধ্যে ৯ জনকে ভর্তি রেখে সেদিনই বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তাদের দেখতে আসাদের কাছে কর্তৃপক্ষ জানতে পারে, তারা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সময় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে গত ২০ জুলাই তিনজনকে ভর্তি রেখে বাকিদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত ২১ জুলাই রাতে চেকআপ করাতে তাদের কয়েকজন আবার হাসপাতালে আসেন এবং বেড নিয়ে রাত কাটান।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২২ জুলাই সকালে সাদা পোশাকে তিনজন এসে ডিএসবি সদস্য বলে পরিচয় দেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হবে—তাদের কাছে এমন তথ্য রয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান এবং তারা এ বিষয়ে কিছু জানে কি না জানতে চান। তবে এমন
কিছু জানা নেই বলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
তবে পুলিশ আসার খবরে চেকআপ করাতে আসাদের কয়েকজন তাড়াহুড়া করে হাসপাতাল ছেড়ে যান বলে জানান ইকবাল।
গত ২২ জুলাই পুলিশ পরিচয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন নেতাকর্মীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়, যা হাসপাতাল চেয়ারম্যান তাহমিনা আক্তার নিশ্চিত করে বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে ম্যানেজার ইকবাল জানান, মিডিয়ায় কী প্রকাশ হয়েছে, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। তাদের চেয়ারম্যান বা কর্তৃপক্ষের কেউ এ ধরনের কথা বলেননি। এমনকি ওইদিন কাজী তাহমিনা আক্তার হাসপাতালে ছিলেন না বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের কাগজপত্র ঘেঁটে জানা যায়, ১৪ জুলাই ভর্তি করা রোগীর সবাইকে ২০ জুলাই ছাড়পত্র দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এরপর আর এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো রোগী ভর্তি থাকার রেকর্ড পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ২১ তারিখ রাতে চেকআপ করতে আসাদের ভর্তির কোনো রেকর্ডও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি।
এ বিষয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কোনো সদস্য হাসপাতালে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই না।
মন্তব্য করুন