গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাজধানীর বাড্ডা থেকে অপহরণের শিকার হন মিন্টু শিকদার নামে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী। এক দিন পর অপহরণকারী ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার ও অপহৃত মিন্টুকে উদ্ধার করে পুলিশ। এক মাসের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আসে ইয়াসিন। তারপর গত ২১ জানুয়ারি মিন্টু শিকদারের ভাই কাদের শিকদারকে কুপিয়ে এক কোটির বেশি পরিমাণ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় র্যাব গত ২৩ জানুয়ারি ইয়াসিনসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা হলো অন্তর রহমান, মো. রাকিবুল, বিল্লাল মোল্লা, মেহেদী হাসান, শেখ মোহাম্মদ, রাজু আহম্মেদ ও রবিউল ইসলাম। এদের মধ্যে ইয়াসিনসহ সাতজনকে গুলশান থানা পুলিশে হস্তান্তর করে। রবিউল ইসলাম নৌবাহিনীর সদস্য হওয়ায় তাকে বাহিনীতে দেওয়া হয়েছে। তারাই রবিউলের বিষয়ে তদন্ত ও বিচার করবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, র্যাব অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে ইয়াসিনসহ দুজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন থানা পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াসিনের কাছ থেকে একটি ডায়েরির সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, কীভাবে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হবে, তার ছক আঁকা ছিল ডায়েরিতে।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মারুফ আহমেদ বলেন, হামলা করে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ইয়াসিনের সম্পৃক্তা পাওয়া গেছে। আশপাশের সিসিক্যামেরা ফুটেজ ও আগের অপহরণের ঘটনা সামনে রেখে মামলার তদন্ত চলছে।
হামলার শিকার কাদের শিকদার কালবেলাকে বলেন, ২১ জানুয়ারি বনানীর কামাল আতাতুর্ক সড়কে আমাদের ‘সিটি মানিটারি এক্সচেঞ্জ’ অফিস থেকে গুলশান ২ এ বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আরও দুজনসহ নির্মাণাধীন হোটেল হিলটনের সামনে আসার পর অতর্কিতভাবে ইয়াসিন ও তার সঙ্গীরা হামলা করে। আমাকে কুপিয়ে আহত করে টাকার ব্যাগ নিয়ে যায়। ব্যাগে ১ কোটির বেশি টাকা ছিল।
আহত কাদের গত শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় ফিরেছেন। অপহরণ, হুমকি ও হামলা প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ইয়াসিন আমাদের গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী। আমরা ভালো আছি, ব্যবসা করছি, এটা তাদের পছন্দ হচ্ছে না। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।
অপহরণ ও হামলা হয়েছে টাকার জন্য দাবি করে কাদের শিকদার বলেন, আমার ছোট ভাই মিন্টুকে অপহরণের পর ইয়াসিন ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। পরে আমি মামলা করি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ও আমার ভাইকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তারের পর এক মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিল। জামিনে বের হয়ে এসে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল।
কুপিয়ে কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান মঞ্জু বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো টাকা উদ্ধার হয়নি। তবে গ্রেপ্তার দুজন রিমান্ডে আছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে আরও পলাতক যে আসামি আছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।