শফিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ১০:০৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
স্বাগত জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি

এক দিন পেছাল খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা

এক দিন পেছাল খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা

উন্নত চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি ও তার সফরসঙ্গীদের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তার সঙ্গে বড় ছেলের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও দেশে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার তাদের দেশে ফেরার কথা থাকলেও গতকাল রাতে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, খালেদা জিয়া ও তার সফরসঙ্গীরা মঙ্গলবার দেশে ফিরবেন। অবশ্য মঙ্গলবার ঠিক কখন তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন, তা জানানো হয়নি। এই তথ্য পরে জানানো হবে বলে ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। দলীয় প্রধানকে স্বাগত ও অভ্যর্থনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলো। এ নিয়ে গত কয়েকদিনে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভাও করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় দলের ঢাকা মহানগর ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে যৌথসভা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন—এমন নিশ্চয়তা আমরা পেয়েছি।

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া বাংলাদেশ থেকে গত ৭ জানুয়ারি রওনা দিয়ে ৮ জানুয়ারি লন্ডন পৌঁছান। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডনের ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ঢাকার প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর এক যৌথসভা ডাকেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন উন্নত চিকিৎসা এবং পারিবারিক সুন্দর পরিবেশের কারণে প্রতিদিনই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি আগের চেয়ে অনেক সুস্থবোধ করছেন। এজন্য তিনি এখন দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এশিয়া মহাদেশের নারীনেত্রীদের মধ্যে গণতন্ত্রের জন্য যে কয়েকজন সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদের অন্যতম খালেদা জিয়া। তিনি কখনো ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করেননি। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ মাস তিনি দুই শিশুপুত্রসহ পাকিস্তানি সেনানিবাসে বন্দি ছিলেন। এ মহীয়সী নেত্রী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠিয়ে নির্যাতন করে অত্যন্ত অসুস্থ করে ফেলে। খালেদা জিয়ার অসুখের জন্য স্থানীয়ভাবে আমরা চিকিৎসা করিয়েছি, জন হপকিন্সের চিকিৎসকরাও এসেছিলেন। এরপর জুলাই অভ্যুত্থানের পর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান। এ কথাগুলো বলার অর্থ হলো, গণতন্ত্রের প্রশ্নে ত্যাগ স্বীকার করা তার মতো নারীনেত্রী আমাদের চোখে খুব একটা পড়ে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি আমাদের দেশের মানুষের জন্য বড় সম্পদ। শুধু তা-ই নয়, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে তিনি আমাদের আলোকবর্তিকা। যাকে সামনে রেখে আমরা সব সময় লড়াই সংগ্রাম করি। তবে জনগণের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও দূরদৃষ্টি, সেটির নজির তিনি দিয়েছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে দুই মিনিটের বক্তব্য দিয়ে। সেই বক্তব্যে তিনি সবকিছু তুলে ধরেছিলেন। তিনি প্রতিরোধ-প্রতিহিংসা নয়, ভালোবাসার মাধ্যমে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ সেই নেত্রী দেশে ফিরবেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মাঝে আবেগ আছে। দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশের সাধারণ মানুষ আনন্দিত, উজ্জীবিত যে, তাদের নেত্রী ফিরে আসবেন। তাকে যথাযথ সম্মান বা অভ্যর্থনা জানানো এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। শুধু বিএনপি নয়, সারা দেশের মানুষ তাকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত। একটি শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে যাতে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানো যায়, সেজন্য আমরা যৌথসভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের সঙ্গেও কথা হয়েছে।

তিনি বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আহ্বান থাকবে, কোনো যানজট সৃষ্টি না করে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে তারা যেন খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান। এক হাতে জাতীয় পতাকা আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে আমরা মহান নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাব। এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। জনগণের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, তারা যাতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেন। অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত নিচের রাস্তাটি যেন তারা পরিহার করেন। আমার বিশ্বাস, জনগণ এ ক্ষেত্রে সহায়তা করবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গ্রামবাসীর ধাওয়ায় বোমা ফাটিয়ে পালাল ডাকতদল

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে নতুন উদ্যোগ

সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২২২০৩ হজযাত্রী 

নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনায় কমিটি চেয়ে রিট

ঢাকার বাতাস আজ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’

কিশোর গ্যাংয়ের দুগ্রুপের সংঘর্ষ, ছুরিকাঘাতে নিহত ১

মঙ্গলবার কখন দেশে পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া

এসিল্যান্ড না থাকায় ভোগান্তিতে লক্ষাধিক মানুষ

প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ শাক কাঁটানটে

‘প্যালেস্টাইন-২’ দিয়েই ইসরায়েলে হামলা চালাল ইয়েমেন

১০

দুপুরের মধ্যে ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস 

১১

এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ বিকেলে

১২

মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিন : বাবুল

১৩

পরমাণু আলোচনা নিয়ে খামেনির উপদেষ্টার কড়া বার্তা

১৪

গাজায় ক্ষুধায় কাঁদছে মানুষ, মৃত্যু ৫৭

১৫

০৪ মে : টিভিতে আজকের খেলা

১৬

০৪ মে : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৭

দক্ষিণ লেবাননে একাধিক ইসরায়েলি ড্রোন হামলা

১৮

বখাটেদের ভয়ে দুই ছাত্রীর মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ

১৯

পঞ্চগড়ে মাদকসহ মা-ছেলে গ্রেপ্তার

২০
X