ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতনের পর গণপিটুনিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডে আতঙ্ক ছড়ায় দেশজুড়ে। জনতার সন্দেহজনকভাবে কাউকে ধরে মারধর করে হত্যার ঘটনা ‘মব জাস্টিস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। আগস্ট থেকে বছরের শেষ পর্যন্ত শব্দটি ছিল আলোচনায়।
বছরজুড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই মব জাস্টিসের মতো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও হাসিনা সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সুযোগে তা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে গণপিটুনিতে হত্যাকাণ্ডের মতো নির্মম ঘটনা পরে কমে আসে।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদন অনুযায়ী, চব্বিশের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মব জাস্টিসে সারা দেশে ১১৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে আগস্টে গণপিটুনিতে ২১ ও সেপ্টেম্বরে ২৮টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। অক্টোবরে তা কমে দাঁড়ায় ১৯-এ। নভেম্বরে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটে ১৪টি।
আসকের তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী বছরের জানুয়ারিতে গণপিটুনিতে ৬, ফেব্রুয়ারিতে ৩, মার্চে ৮, এপ্রিলে ৮, মে মাসে ৬টি ও জুনে ১টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। জুলাইয়ে গণপিটুনিতে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।
সবচেয়ে আলোচিত ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা। একই দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লা নামে একজনকে। একইভাবে ৮ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পিটিয়ে হত্যা করা হয় পঙ্গু আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে এক তরুণকে। শেষের দুজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন।