বেসরকারি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নারী ও শিশুবিষয়ক অধিকার নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার দিয়েছে। পুরস্কারের নাম ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল গণমাধ্যম পুরস্কার’। জাতীয় গণমাধ্যম ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক জাফর ইকবাল।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রিন্ট, অনলাইন ও টেলিভিশনে প্রকাশিত ও প্রচারিত নারী-শিশুবিষয়ক রিপোর্টের ওপর প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এ পুরস্কার দিয়েছে।
ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহযোগিতায় প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত ‘সমতায় তারুণ্য: ইয়ুথ ফর ইকুয়ালিটি’ প্রকল্পের উদ্যোগে ১৫ জন গণমাধ্যমকর্মীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
এবার ১০৭ জন প্রতিযোগী ২১৪টি কনটেন্ট জমা দেন। যার মধ্যে ৪১ জনের ৫১টি কনটেন্ট প্রাথমিক ধাপে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। পরে ধাপে ১৫ জনের ১৫টি কনটেন্ট নির্বাচিত হয়। দৈনিক কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক জাফর ইকবাল ‘গৃহকর্মী আড়ালে কিশোরী পাচার’ শীর্ষক ৩ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের জন্য এ পুরস্কার পান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল— পেটের দায়ে, পরিবারের মুখে একটু হাসি ফোটাতে দেশ ছাড়ছেন বাংলাদেশের বহু নারী। কিন্তু স্বপ্নের বিদেশে পা রেখেই বদলে যাচ্ছে সেই স্বপ্নের চেহারা। তারা প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছেন যৌন নিপীড়ন, শারীরিক নির্যাতন আর নিঃস্ব করে ফেলা এক নিষ্ঠুর বাস্তবতার। এরপর এসব নারীর কেউ কেউ বিদেশ থেকে ফিরছেন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়, কেউ বা সদ্যোজাত সন্তান কোলে নিয়ে।
দেশে ফিরে পরিবার ও সমাজের তির্যক দৃষ্টির শিকার হচ্ছেন তারা, হারাচ্ছেন ঠাঁই, সম্ভ্রম ও স্বীকৃতি— সবকিছুই। অথচ এ নারীরাই জীবন বাজি রেখে দেশের রেমিট্যান্সের চাকা সচল রেখেছেন। এই মানবিক বিপর্যয়ের পেছনে সক্রিয় রয়েছে একটি সুসংগঠিত পাচারকারী চক্র, যারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভুয়া কাগজপত্রে কিশোরীদের বিদেশে পাঠাচ্ছে।
দৈনিক কালবেলার দীর্ঘ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়াবহ সব তথ্য— চক্রটির সঙ্গে জড়িত অন্তত চারজন বিএমইটি (জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো) কর্মকর্তার সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। জড়িত রয়েছে অর্ধশতাধিক রিক্রুটিং এজেন্সি। প্রশিক্ষণ ছাড়াই, ভুয়া পাসপোর্ট নম্বর ব্যবহার করে, প্রত্যাগত দেখিয়ে শত শত অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে পাঠানো হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে, যেখানে অনেকেই ঠাঁই পাচ্ছেন ডান্স বার, স্পা সেন্টার কিংবা গৃহকর্মীর ছদ্মবেশে নির্যাতনের ভেতরে।
এর আগে জাফর ইকবাল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ শীর্ষক প্রতিবেদনের জন্য অনুসন্ধান ক্যাটাগরিতে ডিজিটাল মিডিয়া এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ অর্জন করেন।
মন্তব্য করুন