রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক হারানো প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ল্যাবএইড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে তারা আঁখির মৃত্যুর ‘স্পষ্ট’ কোনো কারণ উল্লেখ করেনি।
রোববার (১৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টায় ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ খোদা দীপ এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না।
এ সময় সাংবাদিকরা আঁখির মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন করলে তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমরা রোগীকে লাইফ সাপোর্ট অবস্থায় পেয়েছি। তার মাল্টি অর্গান ফেইল ছিল। দুপুর পৌনে ২টায় তিনি মারা যান।’
দীপ বলেন, প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণে আঁখির মৃত্যু হয়েছে। এরকমটা স্বাভাবিকভাবেই হতে পারে।
আঁখির শরীরের কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছিল সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করতে পারেননি।
আঁখির স্বামী সুমন জানান, তার স্ত্রী তিন মাস ধরে চিকিৎসক সংযুক্তা সাহার অধীনে নিয়মিত চেকআপ করাচ্ছিলেন। তার শরীরের অবস্থা নরমাল ডেলিভারির জন্য ঠিক ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টাও করেছিল।
গত ৯ জুন রাতে ডেলিভারির জন্য চিকিৎসক সংযুক্তা সাহার অধীনে আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সে সময় ড. সংযুক্তা সাহার বদলে উপস্থিত ছিলেন ড. মিলি। তিনি কোনো চেকআপ ছাড়াই তাকে কাটাছেঁড়া করেন।
সুমনের ভাষ্যমতে, ডেলিভারি করার জন্য তারা পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ শুরু হতে থাকে এবং রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বের বাচ্চা বের করা হয়। ফলে বাচ্চার হার্টবিট কমে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে নবজাতককে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
সুমন জানান, এ অবস্থায় তিনি বারবার ড. সংযুক্তার খোঁজ করলে কর্তৃপক্ষ জানায় তিনি দেশের বাইরে আছেন।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে সিসিইউ ও এনআইসিইউ না থাকায় আঁখিকে ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এরপর সেন্ট্রাল হাসপাতাল সুমনকে জানায় তাদের বাচ্চাটি মারা গেছে।
ল্যাবএইডের সিসিইউতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয় আঁখিকে। অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১২ জুন ৬ চিকিৎসকের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন