ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে চার বছরের দায়িত্বে সফলতার সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
রোববার (১৯ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে মেয়র তাপসের দায়িত্বভার গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চার বছর’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে আমরা সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেই। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২০ সালের ৬ জুন আমরা বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করি। বর্তমানে সূচি অনুযায়ী সারা বছরই আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি। শুধু তাই নয়, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বেগবান করতে আমরা নতুন মশককর্মী নিয়োগ দিয়েছি। পূর্বে ৪২৪ জন মশককর্মী এই কার্যক্রম পরিচালনা করত। বর্তমানে এক হাজার ৫০ মশককর্মী ও মশক সুপারভাইজার নিয়মিতভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। একইসঙ্গে আমরা প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতিও বৃদ্ধি করেছি।
তিনি বলেন, আমার দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বে ৫৫১টি ফগার মেশিন, ৪৩১টি হস্তচালিত মেশিন ও ১৭টি হুইলব্যারো মেশিন দিয়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। গত চার বছরে আমরা নতুন আরও ৫৩৫টি ফগার মেশিন, ৬০০টি হস্তচালিত মেশিন ও ২৯টি হুইলব্যারো মেশিন ক্রয় করেছি। এ ছাড়াও, বার্ষিক কর্মপরিকল্পনার আলোকে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময়, করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এক হাজার ৮৬টি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা), মসজিদ-মন্দির, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিয়ন্ত্রণ অভিযান পরিচালনা, কোনো ওয়ার্ডে সপ্তাহে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলে সে ওয়ার্ডকে লাল চিহ্নিত এলাকা (রেড জোন) ঘোষণা করে চিরুনি অভিযান পরিচালনা, করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে।
শেখ তাপস বলেন, একটি বিষয় সবার কাছে পরিষ্কার করতে চাই। আমাদের কাছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গু রোগীর প্রাত্যহিক যে তথ্য সরবরাহ করা হয়, করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে কাউন্সিলররা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা ও মশকর্মীরা সে ঠিকানা পরিদর্শন করে এবং ডেঙ্গু রোগীর বাসস্থল ও চারপাশের ৩০০ গজ এলাকায় বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সরবরাহকৃত তথ্যে নানাবিধ অসংগতি থাকে। ফলে এডিস মশার প্রজননস্থল নিধন কার্যক্রমে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয় এবং প্রকৃত রোগী খুঁজে বের করতে আমাদের বেশ বেগ পেতে হয়। তারপরও আমাদের গভীর তদারকির ফলে আমরা সব রোগীর বাসাবাড়ি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকি। এমন একজন রোগীও খুঁজে পাওয়া যাবে না, যার বাসাবাড়িতে আমরা যাইনি এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়নি।
মেয়র বলেন, এভাবে যাচাইবাছাই শেষে গত বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় নয় হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী পেয়েছি (তখন সারা দেশে রোগী ছিল দুই লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন), যা সারা দেশের মোট রোগীর মাত্র ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ফলে সফলতার সঙ্গে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
মন্তব্য করুন