বাংলাদেশের ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স, হোম অ্যান্ড কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ও ডিজিটাল ডিভাইস পণ্য উৎপাদন শিল্পের পথিকৃৎ ওয়ালটনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এসএম নজরুল ইসলামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ২০১৭ সালের এই দিনে ৯৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার, করপোরেট অফিসগুলোর পাশাপাশি দেশব্যাপী ওয়ালটনের সার্ভিস সেন্টার, প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুমগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শোক দিবস পালনের পাশাপাশি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিন দুপুরে গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে মরহুম এসএম নজরুল ইসলাম স্মরণে শোক দিবস পালনের পাশাপাশি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসসহ মিরপুর ওয়ালটন কমপ্লেক্সেও বাদ আসর বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকেও দেশব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় মরহুম নজরুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের পাশাপাশি মহান আল্লাহর নিকট তার রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এই দিনে ৯৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এসএম নজরুল ইসলাম। কর্মজীবনে অত্যন্ত সফল ছিলেন তিনি। প্রথমে বাবা এসএম আতাহার আলী তালুকদারের সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত হলেও স্বাধীনতার পর আলাদাভাবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সৎ, নিষ্ঠাবান ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন সব মহলে। যে ব্যবসাতেই হাত দিয়েছেন, সফলতা পেয়েছেন সেখানেই।
দেশের মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে এসএম নজরুল ইসলাম ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রেজভী অ্যান্ড ব্রাদার্স, সংক্ষেপে আরবি গ্রুপ। পরবর্তীতে তা নাম বদলে হয়ে যায় ওয়ালটন গ্রুপ। ২০০৮ সালে গাজীপুরের চন্দ্রায় নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন শুরু হয় ওয়ালটন পণ্যের। সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের পণ্য এবং সেবা দিয়ে ওয়ালটন জয় করে নেয় গ্রাহকের আস্থা।
তার দূরদর্শিতা ও সুযোগ্য পরিচালনায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা ওয়ালটন পণ্যের সুনাম ও খ্যাতি আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত ওয়ালটন এখন বিশ্বের কাছে শিল্পসমৃদ্ধ বাংলাদেশের ইতিবাচক ইমেজ তুলে ধরছে। বাংলাদেশও যে পারে বিশ্বের কাছে সেটিই প্রমাণ করছে মেড ইন বাংলাদেশ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য। ওয়ালটনকে এগিয়ে নিতে বিশাল ভূমিকা রাখছেন তার মেধাবী সন্তানরা।
ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি আলহাজ এস এম নজরুল ইসলাম বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা সার ডিলার সমিতির সভাপতি, টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের পরিচালক এবং টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় জমি বন্ধকি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি তার নিজ গ্রামে এসএম নজরুল ইসলাম কারিগরি বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ ছাড়া মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এতিমখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত সহযোগিতা দিতেন। অসুস্থ ও দরিদ্র মানুষের জন্য তার হৃদয় কাঁদতো। তিনি গ্রামের দুস্থ, বৃদ্ধ ও মহিলাদের জন্য বয়স্ক ভাতা প্রকল্প চালু করেছেন।
আজ প্রয়াণ দিবসে এই মহৎ ব্যক্তিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে ওয়ালটন পরিবারের সদস্যরা।
মন্তব্য করুন