মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) ওই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।
অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্তে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ইউএনও।
আরও পড়ুন : অধিকাংশ বিদ্যালয়ে নেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি
ইউএনও বরাবর দেওয়া ওই ছাত্রীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইতিহাসের শিক্ষক ফজলুর রহমান বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কয়েকবার তাকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন এবং ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলেন। গত ১৮ জুলাই শিক্ষিকা মিলনায়তনে নিয়ে জোর করে ওই ছাত্রীর শরীরে হাত দেন এবং যৌন হয়রানি করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী লিখেন, ‘আমাকে বই দেওয়ার কথা বলে স্যার-ম্যাডামের স্টাফ রুমে নিয়ে জোর করে যৌন হয়রানি করেন।’
ওই ছাত্রী আরও জানায়, বিষয়টি তাৎক্ষণিক কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়াকে অবহিত করি। অধ্যক্ষ কোনো সহায়তা না করে প্রশাসনের কাছে যেতে বলেন। তবে বিষয়টি কাউকে না জানাতে তার বাসায় গিয়ে শিক্ষক ফজলুর রহমান হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
ইউএনর কাছে এ ঘটনার বিচার ও নিরাপত্তার দাবি জানান দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী।
এ নিয়ে কথা হয় কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রী ও শিক্ষিকার সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারাও শিক্ষক ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের অভিযোগ করেন।
শিক্ষক ফজলুর রহমান নিয়মিতই ছাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এমন অভিযোগ করে তারা জানান, এসব বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়াকে অবহিত করা হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে কমলগঞ্জ সরকারি গণমহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা আমার কাছে নানা অভিযোগ নিয়ে আসে। কিন্তু যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো ছাত্রী আসেনি। ইউএনওর কাছে অভিযোগ প্রদানের বিষয়টিও আমার জানা নেই। এই বিষয়টি (যৌন হয়রানি) আমি আজকেই প্রথম শুনলাম।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘এটি বানোয়াট, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রইছ আল রেজওয়ান কালবেলাকে বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন