বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানী ঢাকা মিরপুরে গুলিতে আহত লক্ষ্মীপুরের পারভেজ হোসেন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ৪০ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানী ঢাকা কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম মোস্তফা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে (১২ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানী ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ পারভেজ এর মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহত পারভেজ লক্ষ্মীপুর জেলা সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ধন্যপুর গ্রামের মো. নবী উল্যার ছেলে। পারভেজ ঢাকা মিরপুর-১০ নম্বর সেনপাড়া থাই গ্লাসের কাজ করতেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা মিরপুর-১০ নম্বর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পারভেজ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই রাতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের তার মাথায় অপারেশন করা হয়। দীর্ঘ ৪০ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যায় তিনি।
নিহতের চাচা মহিন উদ্দিন বলেন, আমার ভাতিজা খুব ভালো ও কর্মঠ ছিল। সংসারে তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে সে বড়। আমার ভাই নবী উল্যা মানসিক রোগী তাই সংসারে অভাবে কারণে পারভেজ চতুর্থ শ্রেণির বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি। পরে এলাকায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে পরিবারের হাল ধরে। গত ৭ বছর থেকে ঢাকা গিয়ে থাই গ্লাসের কাজ করত সে। তার আয়েই তাদের সংসার চলত। এখন পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পারভেজের মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে স্থানীয় কামার হাট ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
এ বিষয়ে রাজধানী ঢাকা কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পারভেজ নামে এ যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এতে তার মাথার বাঁ পাশে গুলি লাগে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হলে খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়র্দী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মরদেহটি পরিবারের লোকজনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এই বিষয়ে থানায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন