মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ও সুন্নি জনতা। যার কারণে দুই ঘণ্টা অচল থাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগ পড়েন দূরপাল্লার বাসসহ যাত্রীরা।
সোমবার (৫ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কের একাধিক স্থানে অবরোধ করা হয়েছে। অবরোধকালে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ছাত্ররা অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা বলাতে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের কদমরসুল এলাকায় সড়কের ওপর লোহার পাইপ এবং বসার টেবিল রেখে অবরোধ করা হয়েছে। সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধকারী ব্যক্তিরা মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিন হত্যার বিচার ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। অবরোধের কারণে সড়কের দুই দিকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ৩০ কিলোমিটারের অধিক যানজট সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
ঘটনাস্থলে কথা হয় নুরুল কিববিয়া নামের এক যুবকের সঙ্গে। তিনি বলেন, সীতাকুন্ড পৌর সদর থেকে নগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এর মধ্যে শীতপুর এলাকায় অবরোধের কারণে দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে অবস্থান নিতে হয়। এ সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গাড়ি যানজটে পড়তে দেখা যায়।
অবরোধ চলাকালে প্রতিটি স্থানে কয়েকশ সুন্নি জনতা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এ সময় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা সীতাকুণ্ড উপজেলার সভাপতি মুশফিক ইলাহি বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি অনুযায়ী অবরোধ পালন করে ইসলামী ছাত্রসেনার নেতাকর্মী ও সুন্নি জনতা।
তিনি আরও বলেন, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ৯টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করার কথা ছিল। কিন্তু এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের কথা চিন্তা করে ১০টা থেকে অবরোধ শুরু হয়। মাওলানা রইস উদ্দিনকে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে তাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, রয়েল সিমেন্ট গেট, বগুলা বাজার, কদমরসুল ও ভাটিয়ারী এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহেল রানা জানান, তিনি আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা মহাসড়ক ছাড়ছেন না। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে তারা নিদিষ্ট সময়ের এক ঘণ্টা পূর্বে ১১টার সময় অবরোধ তুলে নেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দরাবাদ এলাকার একটি মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গাছে বেঁধে মারধর করে একদল লোক। পরে সকাল ১০টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরদিন ভোরেই কারাগারে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার পর থেকে চট্টগ্রামে টানা কর্মসূচি দিয়ে আসছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত। সর্বশেষ গত শনিবার নগরের লালদীঘি মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। রোববার ছিল ‘মার্চ টু গাজীপুর’ কর্মসূচি।
মন্তব্য করুন