ফেনী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫, ১১:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভাইয়ের ‘প্রতারণায়’ নিঃস্ব প্রবাসফেরত তমিজ

ভুক্তভোগী প্রবাসফেরত তমিজ উদ্দিন। ছবি : কালবেলা
ভুক্তভোগী প্রবাসফেরত তমিজ উদ্দিন। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘ ৩৪ বছরের প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে এসেছেন ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা তমিজ উদ্দিন। ১৯৯০ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশে পাড়ি জমান তিনি। তবে প্রবাসে কাটানো জীবনের বড় একটি সময় (২৫ বছর) তিনি কুয়েতের কারাগারে কাটিয়েছেন। সব কিছু উপেক্ষা করে দেশে ফিরে নতুন জীবন শুরুর আশায় ছিলেন তিনি।

কিন্তু দেশে ফিরে দেখেন স্ত্রী, সন্তান, পৈতৃক ভিটেমাটি, জমিজমা, কোনো কিছুই আর তার নেই। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, তমিজ উদ্দিনের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে আপন ছোট ভাই আলাউদ্দিন দখল করে নিয়েছেন পৈতৃক সব সম্পত্তি। আর স্ত্রী-সন্তানরাও অন্যত্র চলে গিয়েছেন। শেষ বয়সে সব হারিয়ে এখন মাথা গোঁজার ঠাঁইও নেই। এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সর্বশেষ এক বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানেন না সম্পত্তি আদৌ ফিরে পাবেন কি না? এ জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তমিজ উদ্দিন বলেন, এক ভারতীয় নাগরিক হত্যার ঘটনায় কুয়েত পুলিশ আমাকে জেলে নিয়ে যায়। কিন্তু আমি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। পরে তারা আমাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়। আমি ভেঙে পড়িনি, আপিল করেছি। পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। খালাসের জন্য কয়েক দফা আবেদন করি, অবশেষে ২৫ বছর সাজা ভোগ করার পর মুক্তি পাই।

তিনি বলেন, ভেবেছিলাম দেশে ফিরে অন্তত একটা ছায়া পাব। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করব। কিন্তু এসে দেখি, নিজের ভিটেতেই আমি অনাহূত। স্ত্রী-সন্তান মৃত্যুদণ্ডের খবর শুনে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমায়। আমার আপন ভাই সব সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছে। আমি সরকারের কাছে প্রতিকার দাবি করছি।

তমিজ উদ্দিনের ভাই জহির উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও আলাউদ্দিন কোনো প্রকার মীমাংসায় রাজি হননি। উল্টো প্রবাসী তমিজ উদ্দিনকে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হচ্ছে। এর আগে তমিজ উদ্দিনকে মাদক মামলায় জড়িয়ে দিয়েছিল। পরে আদালত তাকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমি কারও সম্পত্তি দখল করিনি। পৈতৃক সম্পত্তি যতটুকু পেয়েছি, ততটুকই ভোগদখল করছি। তার (তমিজ উদ্দিন) সম্পত্তি কোথায় আছে, কার দখলে আছে জানি না।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম বাহাদুর কালবেলাকে বলেন, এমন অনেক প্রবাসী আছেন, যারা বছরের পর বছর কষ্ট করে দেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠালেও দেশে ফিরে ভিটেমাটি খুঁজে পান না। সরকারের কাছে আবেদন, প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ান। নইলে একের পর এক তমিজ উদ্দিনরা নিঃস্ব হয়ে যাবে।

জানতে চাইলে দাগনভুঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স ম আজহারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষ ও প্রফেশনাল কোর্সের সব পরীক্ষা স্থগিত

ইতিহাস গড়ে ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিট পেল কেপ ভার্দে

পলিথিনে মোড়ানো শপিং ব্যাগে মিলল নবজাতকের মরদেহ

রোমে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক

কলাবাগানে ডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার

অবশেষে বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে গাজা শান্তিচুক্তি সই

জয়পুরহাট জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কের পদত্যাগ

শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান

‘ড. তোফায়েলের শূন্যতা বহু দশক অনুভূত হবে’

আওয়ামী লীগ নেত্রী কেকার মরদেহ উদ্ধার

১০

স্থানীয় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আনোয়ারুজ্জামানের

১১

পূজা পরিষদ ও মহানগর কমিটির প্রত্যাশা / সংকট সমাধানে এক হয়ে কাজ করার নজির অব্যাহত থাকুক

১২

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে : পিএনপি

১৩

শেষ ওভারের নাটকীয়তায় প্রোটিয়াদের কাছে বাংলাদেশের হার

১৪

নিষিদ্ধ হওয়া ভিডিও নির্মাতাদের সুখবর দিল ইউটিউব

১৫

জাতিসংঘের ৮০তম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে জামায়াতের অংশগ্রহণ

১৬

‘ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াও আমাদের দিনে দাঁড়াতে পারবে না’ 

১৭

রিপন মিয়াকে প্রাণনাশের হুমকি

১৮

ঢাবি সাদা দলের বিবৃতি / এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ওপর আক্রমণ অপ্রত্যাশিত

১৯

৪৮ জেলার ৪৩৫ স্পটে হত্যাকাণ্ড ঘটায় পুলিশ-যুবলীগ : তাজুল ইসলাম

২০
X