দেশে চলমান ভারি বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে দেশের বৃহৎতম কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানিতে টইটম্বুর হয়ে চিরচেনা রূপে ফিরছে কাপ্তাই হ্রদ। এতে করে নৌ-যাতায়াত ব্যবস্থা একদিকে যেমন উন্নতি হয়েছে, তেমনি হ্রদের ওপর নির্ভরশীল দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে রুলকার্ভের চেয়ে প্রায় ১৭ ফুট পানি বেশি রয়েছে। যার ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে দৈনিক ১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে, যা সরাসরি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি আরও বাড়লে সর্বোচ্চ ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে এখন পানি থাকার কথা ৮০ দশমিক ৪২ ফুট মিন সি লেভেল। কিন্তু লেকে এ মুহূর্তে পানি রয়েছে ৯৭ দশমিক ১১ ফুট মিন সি লেভেল। অর্থাৎ রুলকার্ভের হিসেবে কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি রয়েছে। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট এমএসএল পানি ধারণক্ষমতা রয়েছে। তবে লেকের পানি ১০৫ ফুট মিন সি লেভেলে এসে পৌঁছলেই কর্তৃপক্ষ হ্রদ থেকে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। সহসায় বৃষ্টিপাত না থামলে কাপ্তাই হ্রদে পানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌ-যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন আগেও কাপ্তাই হ্রদের যেসব এলাকা পানিশূন্য ছিল সেসব এলাকা বর্তমানে পানিতে ডুবে আছে। পাহাড়ের ঝর্ণাধারা এবং খালবিল ও নদীনালা থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে কাপ্তাই হ্রদে পড়ছে। এতে করে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
কাপ্তাই জেটিঘাট নৌ পরিবহন মালিক সমিতির ম্যানেজার শীতল সরকার জানান, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপ্তাইয়ের সঙ্গে বিলাইছড়ি, রাঙামাটিসহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ি এলাকায় নৌ যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হয়েছে। কিছুদিন পূর্বেও কাপ্তাই হ্রদে পানিস্বল্পতায় নৌ চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে এ সংকট কেটেছে।
মন্তব্য করুন