চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে স্বৈরশাসকের মিথ্যা মামলায় জুলুম-নির্যাতনের শিকার হলেও বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন ছিলেন। গণতন্ত্র রক্ষায় তার সংগ্রামী মনোভাবের জন্যই তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আবদুল খালেক মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজ সাবেক ছাত্রদল ফোরামের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও এতিমদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আশু রোগমুক্তি, দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং এরপর এতিম শিশুদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করা হয়।
ডা. শাহাদাত বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া দেশের মানুষের পাশে থেকেছেন। তিনি কখনো আপোষ করেননি। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, এমনকি জেল খেটেছেন, কিন্তু জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার আন্দোলন থেকে একচুলও পিছিয়ে আসেননি।
স্মৃতিচারণ করে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিটি টালমাটাল সময়ে বেগম খালেদা জিয়া সাহসিকতার সঙ্গে জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৮০’র দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে তার আপোষহীন ভূমিকার কারণেই বিএনপি জনগণের আস্থা অর্জন করে ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তিনি যে দক্ষতা ও সততার পরিচয় দিয়েছেন, তা স্বাধীনতার পর থেকে অন্যতম সেরা শাসনামল হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।
মেয়র বলেন, ২০০৭ সালের এক-এগারোর সময় যখন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তখন খালেদা জিয়া স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘চিকিৎসা নিতে হলে দেশে নেব, মরতে হলে এখানেই মরব, বাংলাদেশের মানুষকে ফেলে বিদেশে যাব না।’ তার আপোষহীন অবস্থানের কারণেই বিদেশি মহল চাপ সৃষ্টি করেও ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। গত ১৬ বছর এত নির্যাতনের পরও খালেদা জিয়া দেশ ছাড়েননি কিন্তু স্বৈরশাসক হাসিনা ঠিকই পালিয়েছে। এখনো যারা দেশের গণতন্ত্রের পথে বিভিন্ন বাধা তৈরি করছে তারাও পালাবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে শেখ হাসিনার অবৈধ শাসনামলে খালেদা জিয়ার জীবন বিপন্ন হয়েছে। কারাগারে থাকার কারণে তার কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। তারপরও তিনি দেশের মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন থেকে সরে আসেননি। এজন্যই তিনি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতীক।
ডা. শাহাদাত হোসেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিকে আবারও ক্ষমতায় এনে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর শিকদার ও মহসিন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ইয়াকুব আলী সিফাত। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন- মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ এমএ আজিজ, কাজী বেলাল উদ্দিন, হারুন জামান, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, খোরশেদ আলম, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, মশিউল আলম স্বপন, মোশারফ হোসেন ডিপটী ও ইসমাইল বালি।
কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জাকির হোসেন, মহানগর বিএনপি নেতা শামসুল আলম, মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, অ্যাডভোকেট মঈনুদ্দিন, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা এস এম মফিজ উল্লাহ, মোশারফ জামাল, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, হাসান উসমান চৌধুরী, গোলাম মনছুর, মো. সালাউদ্দীন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলিফ উদ্দিন রুবেল, নজরুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সামিয়াত আমিন জিসান ও সালাউদ্দিন কাদের আসাদ।
সাবেক ছাত্রদল নেতা আনোয়ার হোসেন, গিয়াস উদ্দিন আবিদ, মহসিন কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব দিদারুল আলম, সাবেক ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিম, ঈমাম হোসেন আবির, মো. ইউনুস, রমিজ উদ্দিন, শহীদুল্লাহ ফয়সাল, গিয়াস উদ্দিন সারজিল, জাহাঙ্গীর আলম, বোরহানুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, জুনাইদ রাসেল, শরিফুল ইসলাম আবির, মন্জুর আলম ও মো. শোয়াইব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন