ভূমির নামজারি সেবায় রাজশাহী জেলায় শীর্ষে উঠে এসেছে দুর্গাপুর উপজেলা ভূমি অফিস। আর সবচেয়ে নিম্নে রয়েছে তানোর উপজেলা ভূমি অফিস। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আওতাধীন এলাকাভিত্তিক মিউটেশন তথ্যে সরকারি ওয়েবসাইটে এ চিত্র উঠে এসেছে।
গত এক মাসে দুর্গাপুর উপজেলা ভূমি অফিসে এক হাজার ৩৪টি নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। গড়ে মাত্র ১১ দিনে আবেদন নিষ্পত্তি করে দুর্গাপুর উপজেলা রাজশাহীর অন্যান্য উপজেলাকে পেছনে ফেলে জেলায় শীর্ষস্থান দখল করেছে।
এলাকাভিত্তিক মিউটেশন তথ্যচিত্র অনুযায়ী, বিগত এক মাসে গড় হিসেবে ১৫ দিনে পুঠিয়া উপজেলায় ৬৬৭টি, ১৮ দিনে মোহনপুর উপজেলায় ৫৪৫টি, ১৯ দিনে চারঘাট উপজেলায় ৯২৬টি, বাঘা উপজেলায় ৬৩২টি এবং বাগমারা উপজেলায় এক হাজার ৪০৬টি নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে।
এ ছাড়া ২১ দিনে পবা উপজেলায় এক হাজার ৯৭৬টি, ২৬ দিনে নগরীর বোয়ালিয়ায় ৮৭৫টি, ২৮ দিনে গোদাগাড়ী উপজেলায় এক হাজার ৯৫৫টি এবং ৪২ দিনে তানোর উপজেলায় ৮৭৩টি নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। সেই তুলনায় গড় হিসেবে দুর্গাপুর উপজেলা ভূমি অফিস জেলার অন্যান্য উপজেলার চাইতে গড় হিসেবে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তিতে সবচেয়ে কম সময় নিয়েছে।
এ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি বর্তমানে ফাঁকা রয়েছে। চলতি বছরের ২ মে থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন চৌধুরী দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বর্তমানে এই পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন। ইউএনও সাবরিনা শারমিন নিজ দপ্তরের কাজ সামলিয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানি লাঘবে নিরলস কাজ করে চলেছেন। ফলে অল্প সময়ে নামজারি সেবা দ্রুত, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব হয়ে উঠেছে।
জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামের লুতফর রহমান বলেন, ‘আগে ভূমির নামজারি করাতে অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করতে হতো। দালালের শরণাপন্ন হতে হতো। এখন দালাল ছাড়াই খুব দ্রুত নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।’
আরেক সেবা গ্রহীতা রানা হামিদ বলেন, ‘ইউএনও স্যারের তত্ত্বাবধানে ভূমি অফিসে শৃঙ্খলা ফিরেছে। সব ধরনের সেবা সহজ হয়েছে। ভূমি অফিসে কোনো ধরনের হয়রানি এখন আর নেই বললেই চলে।’
পৌর সদরের গোড়খাই গ্রামের ওমর ফারুক বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে সরকার নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে আমার ভূমির নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে আমি খুবই সন্তুষ্ট।’
ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা বেশ কয়েকজন সেবা গ্রহীতা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে ও কার্যকরী পদক্ষেপের ফলে ভূমি অফিসে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। নামজারি আবেদন নিষ্পত্তিসহ যে কোনো সেবা খুব দ্রুত মিলছে। ফলে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি অনেকাংশে লাঘব হয়েছে।
সমাজের বিশিষ্টজনরা বলছেন, দুর্গাপুর উপজেলা ভূমি অফিস অল্প সময়ে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা রাজশাহী জেলায় রোল মডেল। ভূমি অফিসের সব ধরনের সেবার মান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
ইউএনও সাবরিনা শারমিন কালবেলাকে বলেন, ‘ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন, সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং এটি অব্যাহত রয়েছে।’
মন্তব্য করুন