বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আগামী নির্বাচনে খুনি, চাঁদাবাজ, মাস্তানদের সঙ্গে নতুন ভোটারদের লড়াই হবে। যে তরুণরা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে সেই তরুণরাই আগামীতেও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিতে ভুল করবে না।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ডুমুরিয়া স্বাধীনতা চত্বরে অনুষ্ঠিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুখতার হুসাইন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াত দেশ সেবার সুযোগ পেলে বেকার সমস্যার সমাধান করে একটি সুখী সমৃদ্ধ মানবিক বাংলাদেশ গড়তে যা করার সেই পরিকল্পনাই করবে। ডুমুরিয়া-ফুলতলার মূল সমস্যা জলাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মূল কারণ হলো বিল ডাকাতিয়া। সেই বিল ডাকাতিয়াকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা করা হবে। ডুমুরিয়া হবে ব্যবসায়িক হাব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রাতিষ্ঠানের আমূল পরিবর্তনে গ্রহণযোগ্য পরিকল্পনা করা হবে। শিক্ষার্থীরা পাস করে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত দেশ শাসনের দায়িত্ব পেলে শুধু মুসলিম নয়, সব ধর্মের মানুষ এমনকি নারীরাও সবচেয়ে মর্যাদাবান হবেন ইনশাআল্লাহ। এজন্য আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ইসলামি মোর্চার প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানান তিনি।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের জুলাই আমাদের ফ্যাসিস্টমুক্ত বা দুর্নীতি-চাঁদাবাদমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন শেখাতে পারেনি, কিন্তু কীভাবে আগামীর একটি নতুন বাংলাদেশ গড়া যায় সেটি শিখিয়েছে। সুতরাং তরুণ প্রজন্ম আগামী নির্বাচনে অন্তত পূর্বের ভুল আর করবে না, যাতে আবারও কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম বাংলাদেশে হয়। তিনি একটি সাম্যের ও বেকারমুক্ত দেশ গড়ার জন্য নতুন ভোটারদের কাছে দাড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সবচেয়ে শক্তিশালী হাত মিয়া গোলাম পরোয়ারকে আমরা শুধু ডুমুরিয়া-ফুলতলার নয়, বরং দেশের একটি মডেল হিসেবে দেখতে চাই। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের দীর্ঘ ৫৪ বছরেও জামায়াতের বিরুদ্ধে হিন্দুসহ অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর নির্যাতন, বাড়ি দখলের কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিগত দেড় দশকে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে নানা প্রপাগান্ডা ছড়িয়েছে। আজ তারা দেশছাড়া। এখনো যারা নানাভাবে জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা তাদের উচিত শিক্ষা দেবে ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতের খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, গোলাম পরওয়ারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে কোনো ফল হয়নি। সুতরাং তাকে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে আগামীতে ইসলামের এবং কোরআনের দেশ গড়ার কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, এমপি থাকা অবস্থায় মিয়া গোলাম পরওয়ার ডুমুরিয়া-ফুলতলায় ৫শ কোটি টাকার কাজ করেছেন। বিনিময়ে তাকে কোনো উপঢৌকন দিতে হয়নি। এজন্য আগামীতে তাকে আবারও এমপি হিসেবে দেখতে চাই।
খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বলেন, আজকের এই ছাত্র-যুব সমাবেশ থেকে শপথ নিতে হবে যে, মিয়া গোলাম পরওয়ারকে বিজয়ী না করে আমরা ঘরে ফিরব না ইনশাআল্লাহ।
ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রশীদের পরিচালনায় এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন- জামায়াতের হিন্দু কমিটির ডুমুরিয়া উপজেলা সভাপতি কৃষ্ণনন্দী, সহসভাপতি ডা. হরিদাস মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেবপ্রসাদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, খুলনা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির, খুলনা জেলা যুববিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্যা, ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির গাজী মো. সাইফুল্যাহ, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ফরহাদ আল মাহমুদ, অফিস সেক্রেটারি মাওলানা শফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুববিভাগের সেক্রেটারি হাফেজ রবিউল ইসলাম, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল আলম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ডুমুরিয়া সদর থানা সভাপতি সরদার আবু তাহের, ডুমুরিয়া উত্তর থানা সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, পশ্চিম থানা সভাপতি সামিদুল হাসান লিমন, মাগুরখালী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাওলানা আব্দুস সোবহান, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মুহা. আব্দুর রশিদ আল আযাদ, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন আমির খান আব্দুল গণি, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন আমির মাওলানা কামরুল ইসলাম, সাহস ইউনিয়ন আমির আব্দুল হান্নান সরদার, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি মো. আব্দুল হাকিম মোড়ল, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি শেখ মোসলেম উদ্দিন, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন আমির মাওলানা আব্দুল হালিম, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মাওলানা মতিউর রহমান, খর্ণিয়া ইউনিয়ন আমির মো. আবুল হোসেন, রুদাঘরা ইউনিয়ন আমির মাওলানা মোস্তফা কামাল, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আমির মো. বেলাল হোসেন, ধামালিয়া ইউনিয়ন আমির মো. মুস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন