

বিএনপিকে অবজ্ঞা করলে ফল ভালো হবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিএনপি ভেসে আসা দল নয়। বিএনপিকে খাটো করে দেখবেন না। আমরা যদি মাঠে নামি তাহলে রাজনৈতিক বিষয়গুলো ভিন্নভাবে আসবে।’
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল ময়দানে সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য, সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির আয়োজনে এ স্মরণসভায় অনুষ্ঠিত হয়।
‘উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন’ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা ঐকমত্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ৭ দিন সময় দিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দল তো হাতের খেলনার মতো নয়। সংস্কার কমিশনের সব সভায় আমরা গেছি। মতামত দিয়েছি। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। সেগুলো হয়নি, সেগুলো পরবর্তী পার্লামেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু তা না করে তারা পক্ষপাতদুষ্টু হয়ে কাজ করছেন। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল আরও বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন হয়েছি। চব্বিশের আন্দোলনের পর সুযোগ হয়েছে গণতন্ত্রের পথে ফেরার। দয়া করে পানি ঘোলা করবেন না। দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেন না।
বিএনপি মহাসচিব জোর দিয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হবে, এর আগে নয়। সংস্কার কমিশনে আমরা যে সব বিষয়ে একমত হয়েছি, তার ভিত্তিতে কাজ শুরু করুন। যেগুলো হয়নি, সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পার্লামেন্টে হবে। দ্রুত তপশিল ঘোষণা করুন। নির্বাচন দিয়ে দিন। অন্যথায় আপনারা ব্যর্থ হবে। সেক্ষেত্রে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে।
প্রয়াত তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্টের বিয়োগান্ত বিদায় তিনি দেখে যেতে পারলেন না। তার বিদায়ে জাতি একজন দেশপ্রেমিক নেতাকে হারিয়েছে। তিনি একটি ইনস্টিটিউট ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকে তিনি সংগ্রাম করেছেন জেল খেটেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু জনগণকে ছেড়ে যাননি। তার মতো নেতার এখন খুব প্রয়োজন। তরিকুল ইসলামের মতো নেতা বারবার জন্মায় না। তাই তার জীবনী লেখা দরকার। যা থেকে পরবর্তী প্রজন্ম শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।
যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, বিএনপির সাবেক তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, ঝিকরগাছা থানা বিএনপির সভাপতি সাবিরা নাজমুল মুন্নী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নজরুল ইসলাম, যশোর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মোহাম্মদ ইসহক, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, যশোর নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুলুক চাঁদ, কোতয়ালী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাও. আব্দুল মান্নান, মিসেস তানিয়া রহমান সুমি, আবুল হাসান জহির, আসাদুজ্জামান মিন্টু, দীপঙ্কর দাস রতন, যুবদল নেতা তমাল আহমেদ প্রমুখ।
স্মরণসভায় দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি মাও. আমানুল্লাহ কাসেমী। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, পুত্র কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
মন্তব্য করুন