

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার এক বছর পার হয়েছে। আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছিলেন। এর মধ্যে ২১ জন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দি আছে। অপরদিকে ১৮ জন এখনো পলাতক। তবে ১৮ জন পলাতক আসামির মধ্যে ১৬ জন আসামির হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারি হয়ে আদালতে ফেরত এসেছে।
বাকি ২ জন আসামির হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারি হয়ে আদালতে ফেরত আসেনি বলে জানিয়েছেন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
আদালত সূত্র জানায়, শুভ কান্তি দাস ও সূকান্ত দত্তের হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা ফেরত না আসায় সোমবার (০১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর ছিদ্দিক আদালত দ্বিতীয়বার তাদের বিরুদ্ধ হুলিয়া-ক্রোকি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৫ আগস্ট তৎকালীন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি শেষে সুকান্ত দত্তসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছিলেন আদালত।
৩১ জনকে আসামি করে মামলার এজাহার দায়ের করা হলেও এজাহারনামীয় গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুর মেথরের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে নতুন করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ আরও ১০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল।
চার্জশিটে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাস, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাস, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাস।
আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, আলিফ হত্যা মামলায় মোট ৩৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। এর মধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮ জন এখনো পলাতক রয়েছে। ১৮ জন পলাতক আসামির মধ্যে ১৬ আসামির হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারি হয়ে আদালতে ফেরত এসেছে। বাকি দুজন আসামির হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারি হয়ে আদালতে ফেরত না আসায় আবারও পুনরায় হুলিয়া এবং ক্রোকি পরোয়ানা জারির আদেশের জন্য রেখেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছিলেন।
২০২৫ সালের ১ জুন আলিফ হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন সিএমপির কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মন্তব্য করুন