

কাঞ্চনজঙ্ঘা-হিমালয় পর্বতের কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা হিম বাতাসের কারণে পঞ্চগড় জেলাজুড়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৭ শতাংশ ছিল। এর তিন ঘণ্টা আগে সকাল ৬টায় ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
জানা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শুরু হয় হিমেল বাতাস আর কুয়াশা। এতে অনুভূত হতে থাকে কনকনে শীত। দিনভর উত্তরের হিমেল বাতাস থাকায় ছড়াতে পারেনি সূর্যের তীব্রতা। এতে কমে যায় দিনের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান।
উত্তরের ঝিরিঝিরি হিম বাতাসের সঙ্গে কুয়াশা থাকায় শীতে কাবু হয়ে পড়ছে উত্তরের এ জনপদের মানুষ। দেখা মেলেনি সূর্যের, জেঁকে বসেছে শীত। শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
ঘনকুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। কনকনে শীত অনুভূত হওয়ায় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে খেটে খাওয়া মানুষের। সকালবেলা ঠান্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়া মানুষ গরম কাপড় পরে বের হওয়ার পাশাপাশি অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
হিম বাতাস আর কুয়াশার কারণে স্থবিরতা দেখা দেয় জনজীবনে। তবে সকাল ৮টার পর দেখা মেলে সূর্যের। সূর্যের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় জনদুর্ভোগ কিছুটা কমে আসে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে সকালে কাজে যোগ দেওয়া খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। সীমাহীন কষ্টে রয়েছেন রিকশা-ভ্যানচালক ও কৃষি শ্রমিকরা। শীতের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রিকশা-ভ্যানে উঠতে চায় না। কনকনে শীতের কারণে দৈনন্দিন আয় কমে গেছে এসব শ্রমজীবী মানুষের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই এ জেলায় শীত তীব্র হচ্ছে। দিনের বেলায় রোদ থাকলেও রোদের তেজ তেমন দেখা যায়নি। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।
একই কথা বলছেন ভ্যান ও অটো রিকশাচালক সুজন ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম। তারা জানায়, শীতের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। এতে করে যাত্রী কমে যাওয়ায় কমেছে উপার্জনও। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাও হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মমিনপাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা একই মনে হচ্ছে। দিন দিন শীত বাড়ছে। তরুণদের জন্য এ শীত সহনীয় হলেও আমাদের মতো বয়স্ক ও শিশুদের জন্য খুব দুর্ভোগের। অনেকেই সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে প্রতিদিন শীতজনিত রোগীর ভিড় থাকছেই। হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। যারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ কালবেলাকে বলেন, তেঁতুলিয়া ও আশপাশের এলাকা দিয়ে তিনদিন ধরে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ (শনিবার) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৭ শতাংশ ছিল। ফলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়।
তিনি বলেন, এর আগের দিন সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
মন্তব্য করুন