

ঘন কুয়াশায় পথ হারিয়ে যমুনা নদীর মাঝখানে আটকে পড়া শিশুসহ ৪৭ জন বরযাত্রীকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া এলাকায় পৌঁছান।
এর আগে, শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দী থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলাগামী বরযাত্রীবাহী নৌকাটি যমুনা নদীর মাঝখানে আটকে পড়ে। ঘন কুয়াশা ও হাড়কাঁপানো শীতের কারণে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এ সময় নারী, শিশু ও বয়স্ক যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন।
জানা গেছে, শুক্রবার সকালে মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে নিলয় হাসান ছানির (২০) বিয়ে উপলক্ষে ৪৭ জন বরযাত্রী বগুড়া শহরের সাবগ্রামের চারমাথা এলাকায় যান। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর-কনেসহ সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কালীতলা ঘাট থেকে নৌকাযোগে মাদারগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। নৌকাটি যমুনার মাঝনদীতে পৌঁছালে ঘন কুয়াশার কারণে নৌকার মাঝি দিকনির্দেশনা হারিয়ে ফেলেন। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় পথ খোঁজার চেষ্টা করা হলেও কুয়াশার কারণে কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ যোগাযোগ করা হলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত অন্য কোনো উপায় না পেয়ে নৌকাটি যমুনা নদীর মাঝখানেই নোঙর করে রাখা হয়।
নৌকাটিতে ১৭ জন নারী ও ৯ জন শিশুসহ মোট ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। শনিবার সকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুয়াশা কিছুটা কাটলে বিকল্প দুই নৌকা করে নিরাপদে জামথল ঘাটে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
বরযাত্রীর নৌকায় থাকা রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় আমরা সারিয়াকান্দির কালিতলাঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে মাদারগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দিই। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর ঘন কুয়াশার কারণে মাঝি পথ হারিয়ে ফেলেন। পথ খুঁজে না পাওয়ায় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নৌকাটি নদীতেই নোঙর করে রাখা হয়।
তিনি আরও বলেন, সারারাত সেখানেই অবস্থান করি। সকালে বিকল্প নৌকায় করে আমরা সবাই নিরাপদে জামথল ঘাটে পৌঁছাই। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন চৌধুরী বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে পথ হারিয়ে যমুনা নদীতে আটকে পড়া নৌকার যাত্রীরা অক্ষত অবস্থায় ফিরে এসেছেন। তীব্র শীতের মধ্যে দীর্ঘ সময় নদীতে অবস্থান করলেও বরযাত্রীসহ নৌকার সবাই সুস্থ রয়েছেন। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
তিনি আরও বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার সময়ে বিশেষ করে রাতের বেলায় নৌপথে চলাচল না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন