

বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পিরোজপুর-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় সমবেদনা জানান তিনি।
দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব, ও গণতন্ত্র রক্ষায় বেগম খালেদা জিয়ার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে শোকবার্তায় মাসুদ সাঈদী বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ’৯০-র গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রত্যেকটি পর্বে বেগম জিয়ার দৃঢ়তা, দেশপ্রেম ও নেতৃত্ব জাতীয় জীবনে গভীর প্রভাব রেখেছে। বাংলাদেশের বহু প্রজন্ম তাকে দেখেছে সাহস, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আন্দোলনে খালেদা জিয়া কয়েক দশক ধরে অবিচল ভূমিকা পালন করেছেন। ফ্যাসিবাদী হাসিনার নির্যাতন, মিথ্যা মামলার পরিক্রমা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভয়াবহতার মাঝেও তার অটল মনোবল ও আপোষহীন অবস্থান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত এবং পরিবারের সঙ্গে গভীর আত্মিক সম্পর্কের কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দুঃশাসনামলে যখন আমার শহীদ পিতাকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিয়মিত আমাদের পরিবারের খোঁজখবর নিতেন। তিনি প্রায়ই আমাদেরকে তার বাসায়/অফিসে ডেকে নিতেন এবং আন্তরিকভাবে সান্ত্বনা ও সাহস দিতেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কেবল একজন রাজনৈতিক অভিভাবকই ছিলেন না, বরং আমাদের পারিবারিক জীবনের সুখ-দুঃখেরও আপনজন ছিলেন। আমার ছোট ভাই নাসিম সাঈদীর বিবাহ অনুষ্ঠানে এবং বড় ভাই রাফীক বিন সাঈদীর কন্যার বিয়েতেও বেগম খালেদা জিয়ার সশরীরে উপস্থিতি হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমার শহীদ পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে (রহ:) বেগম খালেদা জিয়া অকৃত্রিম শ্রদ্ধা করতেন এবং একই সঙ্গে আল্লামা সাঈদীও তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। আমরা নানা মতে বিভিন্ন দলে বিভক্ত থাকতে পারি কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার প্রশ্নে আমাদের কোনো বিভেদ নেই। তিনি দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ গঠনের রাজনীতি করেছেন। ভারতের পরিকল্পনায় তাদেরই সেবাদাস আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় ২০১৩ সালে শাহবাগে ইসলামবিদ্বেষী ষড়যন্ত্র বেগম খালেদা জিয়া প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, বিপরীতে তিনি শাপলা চত্বরের ইসলাম প্রিয় জনতার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। জালিমের কারাগারে বন্দি দেশবরেণ্য আলেম ও আধিপত্যবাদ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে তার আপোষহীন অবস্থান ছিল বিরল সাহসের দৃষ্টান্ত। তিনি আলেমদের অসম্ভব রকম শ্রদ্ধা করতেন এবং সকল ঘরানার আলেমও তার নেতৃত্বের জোটে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহাবস্থান, নাগরিক অধিকার ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের সংগ্রামে তার অবদান যুগ যুগ ধরে প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
বেগম খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মাসুদ সাঈদী বলেন, মহান রাব্বুল আলামিন যেন বেগম খালেদা জিয়াকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দান করেন। আমিন।
মন্তব্য করুন