বান্দরবানের লামায় হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের দেওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড নবায়নে টাকা আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের যোগসাজশে ইউনিয়নের ডিলার টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন হতদরিদ্র উপকারভোগীরা।
জানা যায়, গত ২০১৬ সাল থেকে সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করে সরকার। চলতি বছর উপকারভোগীদের কার্ডের লেখার ঘর শেষ হওয়ায় নবায়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কার্ড নবায়নের জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ডিলারদের নির্দেশ দেন। ওই সুযোগে কার্ড নবায়নের নামে রুপসী পাড়া ইউনিয়নের ডিলার উসুইমং মার্মার বিরুদ্ধে লামা সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক উপুছিং মার্মার নির্দেশে কার্ড প্রতি ১০০ টাকা করে ৩২৭টি কার্ড থেকে প্রায় ৩২ হাজার ৭০০ টাকা অফিস খরচের কথা বলে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকার প্রাণান্তর চেষ্টা করছে সাধারণ দরিদ্র মানুষকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সেবা দিতে। আর সরকারি অফিসে ঘাপটি মেরে থাকা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা সরকারের প্রশংসনীয় এই উদ্যোগগুলোর সেবা পাওয়া সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। খাদ্য অফিসের এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে জানায় ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল।
খাদ্য অফিসের নাম ভাঙিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়ে রুপসী পাড়া ইউপি ডিলার উসুইমং মার্মার কাছে জানতে চাইলে অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, লামার সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক উপুছিং মার্মার নির্দেশে কার্ড প্রতি ১০০ টাকা করে নিয়েছি। টাকাগুলো নিয়ে অফিসের কার্ড খরচ হিসেবে ওনার কাছে জমা দিতে বলেছেন। তার নির্দেশে কার্ড নবায়ন প্রতি টাকা নিচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে লামা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক উপুছিং মার্মা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কার্ড প্রতি ১০০ টাকা করে নেওয়ার জন্য এমন কোনো নির্দেশনা আমি দেই নাই। সরকারিভাবে কার্ড দিচ্ছে না। সেহেতু কার্ডগুলো ছাপাতে কিছু টাকা খরচ হয়। এই টাকা ডিলাররা খরচ করেছে, এ জন্য ২০ টাকা নিতে পারেন।
লামা খাদ্য অফিসের নাম ভাঙিয়ে ডিলার টাকা নিচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকতা মো. সেলিম হেলালী কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারিভাবে কার্ডের জন্য টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। সহকারী উপখাদ্য পরিদর্শক উপুছিং মার্মা নির্দেশ দিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নাই। সরকারিভাবে কার্ড দেওয়া যেহেতু বন্ধ রেখেছে। তাই ডিলারদের নতুন কার্ড করে উপকারভোগীদের দিতে নির্দেশনা দিয়েছি। এ জন্য খরচ হিসেবে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত নিতে পারে। বেশি নিয়ে থাকলে খোঁজখবর নিয়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন