মানিকগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আফরোজা আক্তার (১৩) নামের এক কিশোরীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারের দাবি, আফরোজা ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল এবং তার প্রেমিক অস্বীকার করার কারণেই তাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই বিষয়টি কালবেলাকে জানান নিহতের বড় বোন সুরমা আক্তার।
এর আগে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের চান্দর (টেনারিমোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহত আফরোজা আক্তার এই গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে। সে গড়পাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহতের বড় বোন সুরমা আক্তার কালবেলাকে বলেন, পার্শ্ববর্তী বাড়ির মো. মকুল মিয়ার ছেলে সাব্বির হোসেনের (১৯) সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার বোনের। গত দুই মাস আগে আমাদের বাড়িতে রাতে সাব্বির ও আমার বোনকে এক কক্ষে সন্দেহজনকভাবে দেখতে পায়। সে সময় মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছুই বলিনি। শুধু সাব্বিরের পরিবারে কছে জানাই তাদের ছেলেকে শাসন করার জন্য। এরপরেও সাব্বির আমার বোনকে স্কুলে যাওয়ার পথে বিরক্ত করত বলে জানতে পারি। গত ২ দিন আগে আমদের পাশের বাড়ির ৮ বছরের শিশুকে দিয়ে আমার বোন প্রেগনেন্সির টেস্ট কিট সাব্বিরের কাছে পাঠায়। এই বিষয়টি দেখতে পান পাশের বাড়ির ভাবি। তিনি এই বিষয়টি আমার দাদির কাছে জানান।
নিহত আফরোজার দাদি মানিকজান বেগম বলেন, ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমার নতনি আফরোজাকে ডাক দিয়ে ঘরের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে জিজ্ঞাসা করি। তখন আমার নাতনি আমার কাছে বলে সাব্বিরের সাথে তার এক বছর ধরে প্রেম। তাকে বিয়ের কথা বলে বেশ কয়েকবার মেলামেশা করে সাব্বির। সেজন্য আফরোজা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সে কারণে পরীক্ষা করার জন্য গোপনে প্রেগনেন্সির টেস্ট কিট এনে পরীক্ষা করে। সেই কাঠিতে দুই দাগ উঠলে নাতনি বুঝে যায় তার পেটে সাব্বিরের বাচ্চা। তখন সেই কাঠিটা আবার সাব্বিরের কাছে পাঠায়। এই বিষয়গুলো সাব্বির অস্বীকার করলে আমার নাতনি নানা দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই বিষয়ে জানতে সাব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবার সাথে কথা বললে তিনি জানান, তার ছেলের সাথে আফরোজার প্রেমের কথা তিনি জানেন না।
তিনি আরও জানান, তার মেয়ের সাথে আফরোজা খেলাধুলা করত। তার ছেলে কোথায় গেছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে সাব্বিরের বাবা বলেন, আমার ছেলে কলেজে গেছে। মোবাইল ফোনে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বললে তিনি জানান, তার ফোন নষ্ট হয়ে গেছে।
সদর থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আফরোজার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য করুন