লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে লুট মামলার প্রধান আসামি মো. শাহজাহানকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমানের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৯ জুন) দুপুরে ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান নিজেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় স্থানীয় তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে দোকান লুটের মামলার এক আসামি মো. শাহজাহান ও দুই নম্বর আসামি মাইন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে রাতে বিভিন্ন দেনদরবারের পর এক নম্বর আসামি মো. শাহজাহানকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাদীপক্ষের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থানার ওসি আটক আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মজিবুর রহমান তোরাবগঞ্জ বাজারে হার্ডওয়ার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। আসামিদের সঙ্গে তার দীর্ঘদিন থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে আসামিপক্ষ তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১৮ এপ্রিল পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে মজিবুর ১৪ দিন জেল খেটে জামিনে বের হয়। মজিবুর জেলে থাকা অবস্থায় ২৪ এপ্রিল গভীর রাতে আসামিরা তোরাবগঞ্জ বাজারের তার হার্ডওয়্যার দোকানের গ্রিল ভেঙে দোকানে ঢুকে নগদ টাকাসহ ১০ লাখেরও বেশি টাকার বিভিন্ন মালামাল লুটে নেয়। উপরে তাদের বাসভবন হওয়ায় মজিবের স্ত্রী রৌশনারা নিচে নেমে আসলে আসামিরা দোকানের এক কোণে তাকে বেঁধে রাখে। তার স্ত্রী চিৎকার করলে তাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে এবং শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আশপাশের লোকজন টের পেলে আসামিরা মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এরপর মজিবুর রহমান জেল থেকে বের হয়ে গত ৪ জুন লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে আদালত কমলনগর থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী মজিবুর রহমান বলেন, আমার দোকান লুটের ঘটনায় পুলিশ এক ও দুই নম্বর আসামিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তোরাবগঞ্জ বাজার থেকে আমার সামনে গ্রেপ্তার করে। এখন সকালে মামলার এক নম্বর আসামি মো. শাহজাহানকে বাজারে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। রাতে ওসি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছে বলে আমি জানতে পারি। আমি ওসি সোলাইমানের বিচার চাই।
বাদীপক্ষের মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট মো. সোলাইমান বলেন, দোকান লুটের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করে ছেড়ে দেওয়ার কোনো বিধান নেই। এর জন্য ওসিকে আদালতে জবাবদিহি করতে হবে।
কমলনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেওয়ার শর্তে শাহজাহানকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
মন্তব্য করুন